জাপানে জনসংখ্যা হ্রাস যেন থামছেই না। ২০২৪ সালের অক্টোবরে দেশটির মোট জনসংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩ লাখে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ লাখ ৯৮ হাজার কম। সরকারি পরিসংখ্যানের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ১৯৫০ সালে তুলনামূলক তথ্য সংগ্রহ শুরুর পর থেকে এবারই সবচেয়ে বড় পতন দেখল দেশটি।
বিশ্বের মধ্যে জাপানের জন্মহার বর্তমানে সবচেয়ে কম। এতে করে দেশটির কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী এবং ভোক্তার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে উৎপাদন ও অর্থনীতিতেও। প্রতিষ্ঠানগুলো উপযুক্ত কর্মী খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে।
জাপানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটির জনসংখ্যা টানা ১৪ বছর ধরে কমছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে তরুণ পরিবারগুলোকে সন্তান নিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা, কর্মসংস্থান সংকট ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতা তরুণদের পরিবার গঠনের আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে।
সোমবার এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জাপানের চিফ কেবিনেট সেক্রেটারি ইয়োশিমাসা হায়াশি বলেন, অনেক তরুণ পরিবার সন্তান নিতে চায়, কিন্তু আর্থিক সংকট ও সামাজিক বাস্তবতায় তারা সে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। আমরা বুঝতে পারছি, জন্মহার হ্রাস অব্যাহত আছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার শিশু লালন-পালনে সহায়তা এবং তরুণদের বেতনের উন্নয়নে কাজ করছে, যাতে পরিবার গঠন সহজ হয় এবং শিশুরা নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে।
এএফপি জানিয়েছে, জনসংখ্যা সংকট মোকাবিলায় জাপান এখন বিদেশি তরুণদের শ্রমশক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। তবে দেশটির কড়াকড়ি অভিবাসননীতি এই প্রচেষ্টায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে কেবল অস্থায়ী ভিত্তিতে বিদেশি শ্রমিকদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
জনসংখ্যা সংকট দীর্ঘদিন ধরেই জাপানকে ভোগাচ্ছে। বিয়েতে অনাগ্রহ, সন্তান নেওয়ার ইচ্ছার অভাব এবং সামাজিক মূল্যবোধের পরিবর্তন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এ অবস্থায় সরকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোয় পরিবর্তন এনে একটি সহায়ক পরিবারবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে চায়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল