ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অন্তত ১ লাখ ৭০ হাজার রিম কাগজের প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য সরকারের ব্যয় হতে পারে ৩৬ কোটি টাকা। আর প্রয়োজনীয় কাগজ কেনা ও মুদ্রণকাজের জন্য তিন থেকে চার মাস সময় লাগবে নির্বাচন কমিশনের। গতকাল ভোটের সামগ্রী চাহিদা নিরূপণ, সম্ভাব্য বাজেট-মজুত যাচাই নিয়ে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠক শেষে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। নির্বাচন প্রস্তুতি যেন পিছিয়ে না থাকে সেজন্য ভোটের কাজগুলো গুছিয়ে রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। বৈঠকে কমিশনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিজি প্রেসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ১ লাখ ৬১ হাজার রিম কাগজ কেনা হয়েছিল। তখন ৩৩ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য নানা ধরনের সামগ্রী মুদ্রণ করতে কী পরিমাণ পেপার লাগবে, বাজেট কত হতে পারে এবং কেনাকাটা থেকে মুদ্রণে কত সময় লাগবে, তা নিয়ে গতকাল প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘মূলত পেপার প্রকিউরমেন্ট থেকে প্রিন্টিং পর্যন্ত সময়সীমা কতটুকু লাগে তা নির্ধারণের লক্ষ্যে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকটি হয়েছে। ওনারা বলেছেন যে তিন থেকে চার মাস সময় লাগে। যেভাবে ব্যাকওয়ার্ড ক্যালকুলেশন হবে সেভাবে এগোবে। নির্বাচনের তারিখ বা নির্বাচনের শিডিউল সম্পর্কে যে সিদ্ধান্তটা হবে; তখন যেন আমাদের ব্যাকওয়ার্ড ক্যালকুলেশনটা থাকে।’
তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে কাগজ কী পরিমাণ লাগে সে সম্পর্কে ধারণা নেওয়া, এ-সংক্রান্ত বাজেট সংস্থানের ব্যাপার এবং আগের নির্বাচনের কিছু কাগজপত্র বিজি প্রেসে রয়েছে, সেগুলোর গুণগত মান নষ্ট হয়ে থাকলে ডিসপোজালের ব্যবস্থা করা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে।
ইসি সচিব আরও বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে সামগ্রিক কাজের বিষয়ে অগ্রগতি নিতে একটি কমিটিও করে দিয়েছে ইসি সচিবালয়। তারা যাচাইবাছাই করবে, যে কাগজগুলো নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলো প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ডিসপোজাল করা হবে।
কাগজের পরিমাণ কতটুকু ও কত দিন লাগতে পারে, সে বিষয়ে নিজেদের প্রস্তুত রাখার জন্য এ আলোচনা হয়েছে।
লিড টাইম হিসেবে মোটামামুটি তিন মাস সময় লাগে বলে সভায় জানানো হয়েছে।
এদিকে ইসি কর্মকর্তারা জানান, সংসদ নির্বাচনে ২১ প্রকার ফরম, ১৭ প্রকার প্যাকেট, ৫ প্রকার পরিচয়পত্র, আচরণবিধি, প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল, নির্দেশিকাসহ অনেক কিছু মুদ্রণ করতে হয়। সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব মুদ্রণ করে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরা হয় সভায়। তফসিল ঘোষণার পর মনোনয়নপত্র এবং প্রতীক বরাদ্দ হলে প্রার্থীর নাম, প্রতীক নিয়ে ব্যালট পেপার মুদ্রণ রয়েছে। যেগুলো মাঠপর্যায়ে পাঠাতে হয়।
কর্মকর্তারা আরও জানান, এবার জুনে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শেষ হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ১২ কোটি ভোটারের পাশাপাশি ভোটকেন্দ্র, কক্ষ এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাও আগের তুলনায় বাড়বে। সে ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে। তখনকার বাজারদর বিবেচনায় এ ব্যয় ধরা হবে।