বসুন্ধরা গ্রুপ পেশাদার লিগ জেতার আশা অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে বসুন্ধরা কিংসের। তবে চলতি ঘরোয়া ফুটবলে দ্বিতীয় শিরোপা জেতার হাতছানি দিচ্ছে তাদের। মৌসুমের প্রথম ট্রফি চ্যালেঞ্জ কাপে ঢাকা মোহামেডানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বসুন্ধরা কিংস।
বসুন্ধরা গ্রুপ ফেডারেশন কাপ ফাইনালে ২২ এপ্রিল ময়মনসিংহ রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ঢাকা আবাহনীর মুখোমুখি হবে কিংস। প্রথম কোয়ালিফায়ারে এই আবাহনীর বিপক্ষে এগিয়ে থেকেও টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হেরে যায় তারা। ম্যাচ জিতেই আবাহনী সরাসরি ফাইনালে জায়গা করে নেয়। অন্যদিকে এলিমিনেটর ম্যাচে রহমতগঞ্জ হারায় ব্রাদার্স ইউনিয়নকে।
গতকাল বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস লড়ে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডসের বিপক্ষে। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র থাকলেও অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে ২-১ ব্যবধানে জিতে যায় কিংস। সাত বছর পর দুই দল ফেডারেশন কাপ ফাইনাল খেলবে। ২০১৮ -১৯ সৌমুমে অভিষেক হওয়ার পর ফেডারেশন কাপ ফাইনালে বসুন্ধরা খেলেছিল আবাহনীর বিপক্ষে। বহু ঘটনার ম্যাচে প্রথমে গোল করেও কিংস হেরে যায়। এরপর দুই দল ফাইনাল খেলেনি। এটি হবে কিংসের ৫, অন্যদিকে আবাহনীর ২২তম ফাইনাল।
ফাইনালে ওঠার লড়াই প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জ হলেও কিংস চাপ নিয়েই মাঠে নেমেছিল বলা যায়। একে তো কোয়ালিফায়ারে এগিয়ে থেকেও হার, তারপর ঘরের মাঠে পেশাদার লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মোহামেডানের কাছে হতাশার হার। সত্যি বলতে কি গতকালও কিংস অ্যারিনায় ভ্যালেরিউ তিতার শিষ্যদের শুরুটা ছিল সাদামাটা। জনাথনকে বসিয়ে রাখলে শুরুর সেরা একাদশে তিন বিদেশি ছিলেন। আর্জেন্টিনার হুয়ান লেসকানোকে শুরু থেকে দেখা গেলেও তার মান খুব একটা সন্তোষজনক মনে হয়নি। শক্তির বিচারে ম্যাচে আধিপত্য করার কথা কিংসের। অথচ প্রথমার্ধে গোল হবে এমন কোনো আক্রমণই করতে পারেনি। বরং তুলনামূলকভাবে রহমতগঞ্জ প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের কিছুটা হলেও চাপে রাখে। সলোমন কিং ও বোয়াটেংয়ের দিকে ছিল আলাদা নজর। প্রথমার্ধে ম্যাচ ছিল গোলশূন্য।
কয়েকটি ম্যাচে কিংসের রক্ষণভাগে দুর্বলতা ফুটে ওঠে। ব্রাজিলের ডেসিয়েল আস্থার পরিচয় দিতে পারছেন না। বিশ্বনাথ ইনজুরির পর প্রতিপক্ষকে সামাল দেওয়াটা মুশকিল হয়ে পড়েছে। ৭৫ মিনিটে সলোমন কিং নিখুঁত প্লেসিং শর্টে জালে বল পাঠান। সেখানে অধিনায়ক তপু বর্মণকেও দায়ী করা যায়। তিনি নাবিব নেওয়াজ জীবনের ক্যাট ব্যাক আটকাতে পারতেন। অথচ তা তার পায়ের ফাঁক দিয়ে বল যায় সলোমনের কাছে। এভাবেই এগিয়ে যায় রহমতগঞ্জ।
যাক বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি কিংস সমর্থকদের। সাদ উদ্দিন সমতা ফেরান। লিগে মোহামেডানের বিপক্ষে পিছিয়ে থেকে সমতার গোল করেছিলেন রাকিব। কিন্তু সেই ম্যাচে হেরে মাঠ ছাড়তে হয়। গতকাল পিছিয়ে থেকেও স্বস্তির জয় নিয়েই অ্যারিনা ছেড়েছে কিংস। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের দ্বিতীয়ার্ধে কিংস শিবির উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। বদলি নামা ইনসান হোসেন গোল করে দলকে ফাইনালে নিয়ে যান। তাকে ঘিরে সতীর্থদের সেকি আনন্দ। দেখা যাক, ২২ এপ্রিল এমন উচ্ছ্বাস ধরে রাখতে পারবে কি না কিংস।