চিকিৎসকসংকটে নীলফামারীর জলঢাকায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র ছয়জন চিকিৎসক রয়েছেন। এর সঙ্গে শয্যা ও ওষুধসংকটও রয়েছে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসক ও নার্সদের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জলঢাকার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবার একমাত্র নির্ভরযোগ্য স্থান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতালটিতে চিকিৎসকের ২০টি পদ থাকলেও, একজন গাইনি কনসালট্যান্ট, একজন অ্যানেসথেসিয়া কনসালট্যান্টসহ ছয়জন কর্মরত রয়েছেন। চিকিৎসকসংকটে এখানে পাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সেবা নিতে আসছেন রোগীরা। হাসপাতালে আসা রোগীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অনেক সময় রোগীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। হাসপাতালে ওয়ার্ডগুলোতে শয্যাসংকটে মেঝেতে থেকেই স্বাস্থ্যসেবা নিতে হচ্ছে অনেককে। আশপাশের পরিবেশও অস্বাস্থ্যকর। ২০১১ সালে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩৫ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। তবে জনবল বাড়েনি চাহিদামতো। ৫০ শয্যা হলেও এখানে চালু হয়নি বাকি ১৫টি বেড। ভবন থাকলেও জনবলসংকট ও বরাদ্দ না পাওয়ায় অব্যবহৃত পড়ে আছে সেটি।
জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ এলাকার তাহমিদার রহমান নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘হাসপাতালে আসার পর ইমার্জেন্সি বিভাগে একজন ডাক্তার পেয়েছি। কোনো বেড না পেয়ে ফ্লোরে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। সেখানেও ঠিকমতো ডাক্তার পাওয়া যায় না।’
মহিলা ওয়ার্ডের আরেক রোগীর স্বজন মমিনা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে নিয়ে এসেছি। এখানে ঠিকমতো ডাক্তার আসছে না। সকালে একজন ডাক্তার এসে দেখে যায়। তার পর সারা দিন আর কেউ আসে না। একজন নার্স আছেন, তিনি মাঝে-মধ্যে এসে দেখে যান।
চিকিৎসা নিতে আসা জলঢাকা পৌর এলাকার বিলকিছ আক্তার বলেন, আমার ছেলে অসুস্থ। অপেক্ষা করছি চিকিৎসক এলে চিকিৎসাসেবা নেব। জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. কাজী মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম বলেন, মাত্র ছয় চিকিৎসক দিয়ে পুরো উপজেলার মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা সহজ নয়। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। হিমশিম খেতে হচ্ছে।’ শূন্যপদে জনবল চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জনবল পূরণ হলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবার পরিধি বাড়বে।