জালিয়াতির কেন্দ্রবিন্দু ভারতের উত্তরপ্রদেশের আগ্রা জেলার একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সেই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রেকর্ড থেকে জানা গেছে, মাত্র ৩০ মাসের মধ্যে ২৫ বার ‘সন্তান প্রসব’ করেছেন এক নারী। শুধু তা-ই নয় ওই সময়ের মধ্যে পাঁচ বার বন্ধ্যাত্বকরণও ‘করিয়েছেন’ তিনি। এ নিয়ে শোরগোল শুরু হলে তদন্তে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। যা অনেককেই অবাক ও ক্রুব্ধ করেছে।
ঘটনাটি সামনে এললে হইচই পড়ে। তদন্তে নামেন সরকারি কর্মকর্তারা। তদন্তে উঠে আসে মাতৃস্বাস্থ্যের জন্য বরাদ্দ সরকারি টাকা হাতানোর জন্যই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভুয়া নথি জমা দিয়েছিলেন ওই নারী।
সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জালিয়াতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ওই নারীর নাম কৃষ্ণা কুমারী। নাগলা কদম গ্রামের বাসিন্দা তিনি। মজার বিষয় হল, তাঁকে ধরতে গিয়ে অবাক হয়ে যায় পুলিশ।
তদন্ত করে দেখা যায়, কৃষ্ণা কুমারীর নামে যে জালিয়াতি হচ্ছে। তা নিয়ে বিন্দুবিসর্গ ধারণা নেই তার। আসলে তাঁর পরিচয়পত্র ব্যবহার করে চলছিল দুর্নীতি।
সম্প্রতি এক অডিটে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন (ন্যাশনাল হেল্থ মিশন)-এর প্রকল্প, বিশেষ করে জননী সুরক্ষা যোজনা এবং মহিলা বন্ধ্যাত্বকরণ প্রণোদনা প্রকল্পের অধীনে অনিয়ম দেখার পর জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
ভারতের সরকারি ওই যোজনার আওতায় সন্তান জন্ম দেওয়া এবং বন্ধ্যাত্বকরণ করানোর জন্য আর্থিক সহায়তা করে সরকার। আর সেই অর্থ হাতাতেই কৃষ্ণার পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হচ্ছিল।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভুয়া নথি ব্যবহার করে প্রথমে কৃষ্ণার নামে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। সেই অ্যাকাউন্টেই জমা পড়ত সরকারি প্রকল্প থেকে পাওয়া টাকা। তার থেকে ৪৫ হাজার টাকারও বেশি টাকা তুলে নিয়েছিল জালিয়াতেরা।
এরপরেই ঘটনাটি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। তদন্ত চালিয়ে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে চার জন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারী এবং এক জন কৃষ্ণার গ্রামের এক যুবক। তাদের মধ্যে তিন জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল