জুলাই বিপ্লবে শহীদ আশিকুর রহমান হৃদয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার যৌতা গ্রামে হৃদয়ের বাড়িতে শুক্রবার খাদ্য সহায়তা নিয়ে যান শুভসংঘ সদস্যরা। তারা হৃদয়ের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারত করেন। এরপর শুভসংঘের বন্ধুরা পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানান এবং তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। শেষে হৃদয়ের বাবা আনসার হাওলাদারের হাতে চাল, ডাল, পিঁয়াজ, রসুন, আলু, তেল, লবণ, কাপড় ধোয়া সাবান, গায়ে দেওয়া সাবান, আটা, চিনিসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন।
এদিন কবর জিয়ারতে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন শুভসংঘের সদস্য হাফেজ মো. মুদাচ্ছির। এরপর শুভসংঘের সদস্যরা হৃদয়ের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং হৃদয়ের পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন শুভসংঘের উপদেষ্টা ও বাউফল ইঞ্জিনিয়র ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওহিদুজ্জামান সুপন, উপদেষ্টা ও বাউফল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান ফিরোজ, উপদেষ্টা ও বাউফল সরকারি কলেজ এর প্রভাষক এনামুল হক সায়েম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শুভসংঘের সভাপতি মো. মারনুচ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদ আরিফ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শুভসংঘের আবু জাফর, হুমায়ুন কবির রুবেল, ইফাত হোসেন জিসান, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. রিফাত গাজী, জারিন তাসমিন জিনিয়া, মো. জাকির হোসেন, লাবনী আক্তার রেখা, রাকিবুল হাসান, রমেন চন্দ্র দাস, মো. জামাল হোসেন, মো. মামুন, মো. অপু খান ও মাসকসুদুর রহমান বাচ্চু।
উল্লেখ্য, অভাবের সংসারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হাওয়ার পর আর পড়াশোনা সম্ভব হয়নি। সংসারের অভাব মেটাতে হৃদয় কিশোর বয়সেই ঢাকায় পারি জমায়। ঢাকাতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করত। উপার্জিত টাকা পাঠাত বাবা-মায়ের জন্য। জুলাই বিল্পবে হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে শুরু থেকে অংশ নেয় হৃদয়। গত ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ী এলাকায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা হটাও বিল্পবে যোগ দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। তাঁর মাথায় তিনটি গুলি লাগে।
গুলিবিদ্ধ হৃদয় প্রথম দিকে ভয়ে আত্মগোপনে থেকে চিকিৎসা নেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর হৃদয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকরা তার মাথা থেকে দুটি গুলি বের করলেও একটি বের করতে পারেনি। এরপর থেকে প্রায়ই জ্বর আসত এবং মাথা ব্যথা করত। ২ এপ্রিল হৃদয় হঠাৎ অসুস্থ হন। মাথাব্যথা ও প্রচ জ্বর আসে। ৪ এপ্রিল বিকালে তিনি মারা যান। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে হৃদয় ছিলেন সবার ছোট।