মডেল মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া ও আটকাদেশের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাই কোর্ট। একই সঙ্গে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মেঘনা আলমকে দেওয়া আটাকাদেশ কেন আইনি কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
একই দিন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, মডেল মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে যে প্রক্রিয়ায় আটক করা হয়েছে, সেটা সঠিক হয়নি। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধানের পদ থেকে রেজাউল করিম মল্লিককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল মেঘনার বাবার করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদির হাই কোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। রুলে ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার, কারণ না জানিয়ে গ্রেপ্তার, ২৪ ঘণ্টার বেশি ডিবি কাস্টডিতে রাখা, আইনজীবীকে সুযোগ না দেওয়া এবং মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের দেওয়া আটকাদেশ কেন আইনি কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাই কোর্ট। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন। তিনি জানান, আদালত দুটি বিষয়ে অর্থাৎ গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া ও আটকাদেশের বৈধতা প্রশ্নে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেছেন। এদিকে গতকাল সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। তবে যে প্রক্রিয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা ঠিক হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, মডেল মেঘনা আলমকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডিটেনশন দিয়েছিল। এনিয়ে অনেক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আপনাদের শুধু একটি জিনিস বলতে চাই, আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ে এ নিয়ে মিটিং করেছি। আমরা এ ব্যাপারে বিভিন্ন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান এবং অন্য অনেকের বক্তব্যে সচেতন আছি। আসিফ নজরুল বলেন, মডেল মেঘনা আলমের যদি কোনো অপরাধ থাকে, সে অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়াটি ঠিক হয়নি, এটি তারা (সরকার) স্বীকার করছে। কিন্তু গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়াটি ঠিক হয়নি মানে তার বিরুদ্ধে অপরাধের কোনো আলামত বা অভিযোগ নেই, এটা না, সেরকম কিছু আছে। সেটির পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় আছে, সেটির ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুব শিগগির উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ছাড়া এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধানের পদ থেকে রেজাউল করিম মল্লিককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ের শনিবারের এক আদেশে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে মডেল মেঘনা আলমকে তার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ডিএমপির ডিবি। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের মাধ্যমে মেঘনা আলমকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেওয়া হয়। সুনির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে মেঘনা আলমের আটকের ঘটনা নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।