ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও দক্ষিণপাড়া গ্রামে শালিসকারীরা বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। রবিবার দুপুরে শালিস থেকে গিয়ে শতশত মানুষ বাড়িঘর ভাংচুর করে নিজ ঘরে বাবা আব্দুল গফুর (৪০) ও ছেলে মেহেদী হাসানকে (১৫) কুপিয়ে হত্যা করে। তাদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে এলাকায় মাদকদ্রব্য বিক্রি ও চুরি অভিযোগ রয়েছে।
বাবা ও ছেলেকে হত্যার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে গিয়ে হারুন নামের এক ব্যক্তির বাড়ি, দোকান ও একটি মাজার ভাঙচুর করেছে। পরে বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার কাজী আখতারুল আলম। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার আতংকে গ্রামটি প্রায় পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। যারা গ্রামে আছেন তারাও ভয়ে কোন কিছু বলতে রাজি হয়নি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য বিক্রি ও চুরি ঘটনায় গোষ্ঠীর পাশাপাশি অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে গ্রামের মানুষ। এ নিয়ে কয়েক দিন যাবৎ গ্রামে শালিস বসার কথা ছিল।
রবিবার দুপুরে গফুরের বাড়ি সংলগ্ন নাওগাঁও হোসেনীয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সামনে গ্রামের শত শত মানুষের শালিস বসে। শালিসে আব্দুল গফুর ও মেহেদী হাসান উপস্থিত না হয়ে নিজ ঘরে রাম দা নিয়ে বসে থাকে। এদের খোঁজে শালিসের লোকজন বাড়িতে গেলে দা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসে আব্দুল গফুর। এসময় শালিসে উপস্থিত বিক্ষুব্ধ লোকজন দা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আ. গফুর ও তার ছেলে মেহেদী হাসানকে হত্যা করে। বাবা ছেলেকে হত্যা করার পর শতশত মানুষ রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে গিয়ে হারুন অর রশিদ নামের একজনের বাসা, দোকান ঘর ও একটি মাজার ভাংচুর করেন।
নিহত আ. গফুরের স্ত্রী শিল্পি আক্তার বলেন, স্থানীয় হাবিবুর রহমানসহ শতশত মানুষ শালিসের নামে আমার স্বামী ও ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন। যত অপরাধই করে থাকুন দেশে আইন আছে, আইনের মাধ্যমে বিচার হতো। বাবা ছেলেকে কেন নির্মম ভাবে হত্যা করলো।
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মো. রোকনুজ্জামান বলেন, শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে বাবা ছেলের বিরুদ্ধে গ্রাম্য শালিস বসেছিল, শালিস থেকে গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল