নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজিতে স্ত্রী সন্তানসহ তিনজন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা ধারালো অস্ত্রটি (বটি) বাড়ির কাছের একটি পুকুর থেকে সোমবার দুপুরে উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ এর আগে ওই একই পুকুর থেকে রক্তমাখা জামা-কাপড় ভরা একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়৷
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম বলেন, স্ত্রী লামিয়া আক্তার, ৪ বছরের সন্তান আব্দুল্লাহ ও লামিয়ার বড়বোন স্বপ্না আক্তারকে লামিয়ার স্বামী ইয়াছিন একাই হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের রাস্তায় ইটাসুরকির নিচে চাপা দেয়৷ গত ১১ এপ্রিল দুপুরে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয় এবং ওই দিনই ঘাতক ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ইয়াছিনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠালে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন৷
জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক ইয়াছিন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে একাই স্ত্রী সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করেছে৷ মাদকের টাকার জন্য উছৃংখলতা ও ভাংচুরের অভিযোগে সৎ মায়ের দায়ের করা মামলায় ইয়াছিনকে পুলিশ ২৭ রমজান গ্রেপ্তার করে ৷ ঈদুল ফিতরের ২ দিন আগে ইয়াছিন জামিনে ছাড়া পায়৷ পুলিশ আরও জানায়, ইয়াছিনের স্ত্রী লামিয়া আক্তার সন্তান আব্দুল্লাহ লাবীব ও বড়বোন স্বপ্না আক্তারকে নিয়ে মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার আক্তার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতো৷ ইয়াছিন জামিনে আসার পর গত ৮ এপ্রিল স্ত্রীর বাসায় যান৷ এ সময় লামিয়া ও ইয়াছিন এর মধ্যে ঝগড়াঝাটি শুরু হয়৷ এ সময় লামিয়ার বড়বোন মানসিক রোগী স্বপ্না আক্তার বটি নিয়ে তেড়ে আসে ইয়াছিনের দিকে৷ ইয়াছিন স্বপ্নার কাছ থেকে বটি কেড়ে নিয়ে স্ত্রী লামিয়ার গলায় কোপ দিলে দেহ থেকে গলা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে৷ এ সময় স্বপ্না আক্তার ডাকচিৎকার দিলে ইয়াছিন স্বপ্নাকেও কুপিয়ে গলা, হাত পা বিচ্ছিন্ন করে এবং শিশু আব্দুল্লাহর গলায় থাকা তাবিজের সুতা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে৷ এর পর সে লাশ তিনটি বস্তায় ঢুকিয়ে রাস্তার পাশে ইটাসুরকির নিচে চাপা দেয়৷ রক্তমাখা বটি বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেয় এবং তিনজনের রক্তমাখা জামাকাপড় একটি ব্যাগে ভরে ওই পুকুরে ফেলে দিয়ে ইয়াছিন অত্যান্ত ঠান্ডা মাথায় লামিয়ার বাসায় বসবাস করতে থাকে এবং ঘুরে ঘুরে লাশ চাপা দেওয়াস্থানে পর্যবেক্ষণে রাখে৷
পুলিশের কাছে ইয়াছিন আরও জানিয়েছে ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ৯ টা থেকে ১০ টার মধ্যে সে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ৷ ওসি আরও জানায় ইয়াছিনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷
বিডি প্রতিদিন/হিমেল