এক সময় আশ্বিন ও কার্তিক মাসে উত্তারঞ্চলের মানুষের তেমন কাজ থাকত না। বাড়িতে অলস সময় পার করতেন। তখন অনেকের সংসারে দেখা দিত অভাব-অনটন। স্থানীয় ভাষায় একে ‘মঙ্গা’ বলা হতো। কালের বিবর্তন ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দিন বদলে গেছে। যন্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকরা এখন আগাম ব্রি ধানসহ অন্য ফসল উৎপাদন করছেন। নীলফামারীতে আশ্বিন ও কার্তিক মাসজুড়ে চলছে আগাম ধান কাটা-মাড়াই ও আলুসহ শীতকালীন হরেক সবজি আবাদের কর্মব্যস্ততা।
আউশ ধান আবাদে কৃষক আগে প্রকৃতির ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল ছিলেন। খরা মোকাবিলায় সেচ কার্যক্রমের ব্যবস্থা ছিল না। বিঘাপ্রতি ৪-৫ মণ আউশ ধান হতো। উঁচু জমিগুলো পতিত থাকত। কৃষি আধুনিকায়নে ফসলের নিবিড়তা বাড়ায় এক ফসলি জমিতে তিন-চার ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। কৃষক ও দিনমজুররা সাড়া বছর ব্যস্ত থাকছেন। সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন এসেছে। এক সময় অভাবের তাড়নায় কচুর মুড়া, গম ভাজি-ভাত, কাউনের রুটি-ভাত, পায়রা-যবের গুড়া খেয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করতেন এ জেলার মানুষ। এ অভাব ‘মঙ্গা’ নামে পরিচিত ছিল। এ সময়টাকে বলা হতো মরা কার্তিক। প্রবাদ ছিল ‘হাতি ঠেলা যায়, কিন্তু কার্তিক ঠেলা যায় না’। এখন এসবই অতীত। কৃষি যান্ত্রিকরণ ও উদ্ভাবনীর স্বল্প জীবনকালে অধিক ফলনশীল নতুন ধান, আলুসহ নানা আগাম ফসল ঘরে তুলে কৃষকরা মঙ্গাকে প্রতিহত করেছেন। কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, এখন আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান তারা ঘরে তুলছেন। দিনমজুররা জমিতে কাজ করে স্বচ্ছলভাবে জীবিকা নির্বাহ করছেন।