বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ বলেছেন বিএনপি ক্ষমতায় আসলে যারা জেল খেটেছে, মামলা খেয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন— তাদের প্রতিদান দেওয়া হবে। শনিবার কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কায়কোবাদ বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে। নির্বাচনকে ঘিরে একটি ইসলামী দল অংশ নিয়েছে এবং আরও অনেক দল অংশ নেবে। সেখানে জামায়াতে ইসলামী বিভিন্ন জায়গায় বিএনপিকে নিয়ে নানা কথা বলে বেড়াচ্ছে। আমি জামায়াতকে প্রশ্ন করতে চাই— শেখ মুজিব যখন বাকশাল করে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিলেন, তখন আপনাদেরকে রাজনীতির সুযোগ দিয়েছিল কে? আপনাদের রাজনীতি করার সুযোগ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। অথচ আপনারা এখন সেই বিএনপিকে নিয়ে মুনাফেকি করছেন; মুনাফেকি করা ঠিক নয়।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিশে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনে নিজেরাই বিপদে পড়েছিল। তাই ২০০১ সালে বেগম জিয়া তাদেরকে আমাদের সঙ্গে এনে ১৮টা আসন দিয়েছিলেন, যা এখন পর্যন্ত তারা কখনো পায়নি। কিন্তু তারা এতটা অকৃতজ্ঞ হবে ভাবতেও পারিনি। তাদের দুইজনকে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন বিএনপি সরকার। এই সুযোগে তারা নিজেদের দলকে সংগঠিত করেছে। যাদের কারণে এমন সুযোগ পেয়েছেন, তাদের সম্পর্কে এমন মন্তব্য করা ঠিক নয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে টর্নেডোর কারণে শ্রীকাইলে তিনটি ঘর উড়ে গিয়েছিল। আমি লোক পাঠিয়ে তাদের সব প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে দিয়েছিলাম— ঘর, কম্বল, হাড়ি-পাতিল সব। তখন একজন আমার কাছে এসে বলল, ‘দাদা, সবকিছু তো পাইলাম, কিন্তু ১০ হাজার টাকা তো পাই নাই।’ আমি বললাম, কিসের টাকা? আমি তো টাকা দেই নাই। পরে খবর নিয়ে জানলাম, একজন জামায়াতের রাজনীতি করে বলে তাকে জামায়াত থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে, আর কাউকে দেয়নি। তখন আমি তাদের বললাম, আপনারা একজনকে দিলেন, বাকিরা কি মুসলমান না?— তারা কোনো জবাব দিতে পারেনি।
জনগণকে সতর্ক করে কায়কোবাদ বলেন, তারা অনেক কথা বলবে, অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করবে। তারা যখন ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে আসে, তখন তাদেরকে প্রশ্ন করবেন— তারা কি কোরআন-হাদিস অনুযায়ী চলে? তাদের পরিবার কি ইসলামী নিয়মে চলে? আপনারা আগামী নির্বাচনে— আমার মা-বোনেরা, ভাইয়েরা, বাবারা— সকালে সকাল কেন্দ্র গিয়ে ভোট দিয়ে প্রমাণ করবেন, ধানের শীষ অতীতের চেয়েও বেশি ভোটে নির্বাচিত হয়েছে।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। শ্রীকাইল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব নাজমুল হাসান ও শ্রীকাইল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. এনামুল হকের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শ্রীকাইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. ইসাহাক মুন্সী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আক্তারুজ্জামান সরকার, সদস্য সচিব এ এফ এম তারেক মুন্সী এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাজী জুননুন বসরী।
আরও উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য মোল্লা গোলাম মহিউদ্দীন, মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোল্লা মজিবুল হক, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কামাল উদ্দীন ভূঁইয়া, সৈয়দ আমজাদ আলী তসু, শাহ আলম সরকার, মো. সজল খান, ফারুক সরকার মজিব, বিএনপি নেতা আব্দুল মোমেন, মহিলা দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শামীমা আক্তার রুবি এবং মুরাদনগর উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি কাজী তাহিমিনা আক্তার।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল