বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় ব্যবসায়ী শ্রেণি এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। একদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অন্যদিকে সামাজিক ও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি—সব মিলিয়ে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ কার্যত অনুপস্থিত হয়ে পড়েছে।
বর্তমান সরকার প্রকৃত গণতান্ত্রিক মানদণ্ডে পরিপূর্ণ নয়। ফলে সরকারের প্রতি জনগণের বা ব্যবসায়ীদের চাপ সৃষ্টির যথাযথ কোনো কাঠামো বা প্রতিক্রিয়া নেই।
সরকারের দায়বদ্ধতা যতটা থাকা উচিত ছিল, বাস্তবে তা অনুপস্থিত। এর ফলে ব্যবসায়ীরা যেসব সমস্যা বা দাবি উত্থাপন করছেন, সেগুলোর প্রতি সরকারি মহলের দৃষ্টিই যাচ্ছে না।
দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা, দুর্বল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা—সব মিলিয়ে একটি অনিরাপদ ও অনিশ্চিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিবেশে দেশি-বিদেশি উভয় ধরনের বিনিয়োগই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সামাজিক স্থিতিশীলতা না থাকলে ব্যবসা পরিচালনা করা শুধু কঠিনই নয়, কখনো কখনো অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এমন বাস্তবতায় ব্যবসায়ীদের অনাস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাঁরা ধীরে ধীরে বিকল্প বাজার বা দেশের দিকে ঝুঁকছেন, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের হুমকি তৈরি করতে পারে।
সরকার যদি এই সংকট কাটিয়ে উঠতে চায়, তাহলে প্রথমেই প্রয়োজন হবে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক চর্চা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালার বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।
ব্যবসায়ীদের সমস্যাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে না নিলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে না, বরং তা ধীরে ধীরে থমকে যাবে।
লেখক : এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক