ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে কাতার। এই লক্ষে দেশটির প্রধান আলোচক মোহাম্মদ আল-খুলাইফি আইসিসি প্রধানের সাথে দেখা করেছেন।
গত সপ্তাহে কাতারের ভূখণ্ডে ‘নজিরবিহীন’ হামলার দায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করেছে কাতার।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কাতারের একজন কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেছেন, কাতারের প্রধান আলোচক মোহাম্মদ আল-খুলাইফি বুধবার হেগে আইসিসি’র প্রেসিডেন্ট বিচারক তোমোকো আকানের সাথে দেখা করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘কাতারের ওপর ইসরায়েলের হামলার জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষে আইসিসি প্রতিটি আইনি ও কূটনৈতিক উপায় অবলম্বন করছে।’
গত সপ্তাহে কাতার-ভিত্তিক ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো প্রাণঘাতি ইসরায়েলি হামলার ফলে উপসাগরীয় দেশগুলোতে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ, এসব দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে তাদের নিরাপত্তার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল।
হামাস জানিয়েছে, ২০১২ সাল থেকে মার্কিন আশীর্বাদে কাতারে আশ্রয় নেওয়া তাদের রাজনৈতিক ব্যুরোর শীর্ষ কর্মকর্তারা হামলায় বেঁচে গেছেন। তবে তারা জানিয়েছে, কাতারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তাসহ পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা ইসরায়েলের আক্রমণকে ‘বেআইনি’ বলে অভিহিত করেছেন এবং আরো বলেছেন, এটি ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন’।
আইসিসি’র পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে কাতার নিজে আদালতে মামলা দায়ের করতে পারে না। কিন্তু দোহায় জরুরি আলোচনার পর আরব ও ইসলামিক ব্লকগুলো সোমবার তাদের সদস্যদের ‘ইসরায়েলকে তার কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে বাধা দেওয়ার জন্য সম্ভাব্য সকল আইনি ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের’ আহ্বান জানিয়েছে।
আইসিসি প্রধানের সাথে সাক্ষাতের পর এক্সে-এক পোস্টে আল-খুলাইফি বলেছেন, তার এই সফর ‘কাতার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবৈধ ইসরায়েলি সশস্ত্র আক্রমণের জবাব দেওয়ার জন্য আইনি পথ অনুসন্ধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কাজের অংশ’।
গত বছর, আইসিসি গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। যার মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করা এবং যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ক্ষুধাকে ব্যবহার করা।
আইসিসি ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্ট এবং হামাস কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফকে গ্রেফতারেরও আহ্বান জানিয়েছে। তবে হামাসের এই নেতা ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সরকারি পরিসংখ্যানের একটি এএফপি’র হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার ফলে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। হামাসের অতর্কিত হামলায় ১,২১৯ জন বেসামরিক ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হন।
জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করা অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক অভিযানে কমপক্ষে ৬৫,১৪১ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
সূত্র : এএফপি
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত