পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান শক্তি সৌদি আরব একটি ঐতিহাসিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তিকে দুই দেশের কয়েক দশকের পুরনো নিরাপত্তা সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক ও আরও দৃঢ় করার একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী, এক দেশের ওপর যে কোনো ধরনের সামরিক আগ্রাসনকে উভয় দেশের ওপর আক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং যৌথভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
এদিকে চুক্তিটি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আমরা সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির খবর দেখেছি। এটি দুই দেশের একটি দীর্ঘদিনের অনানুষ্ঠানিক সমঝোতার আনুষ্ঠানিক রূপ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর এই চুক্তির সম্ভাব্য প্রভাব খতিয়ে দেখব। আমাদের অঙ্গীকার হলো জাতীয় স্বার্থ রক্ষা এবং সর্বস্তরে সমন্বিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) বরাত দিয়ে জানা যায়, বুধবার রিয়াদে চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়। এতে সৌদি প্রধানমন্ত্রী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ উপস্থিত ছিলেন। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, এই চুক্তি উভয় দেশের নিরাপত্তা জোরদার এবং অঞ্চল ও বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য অভিন্ন অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
এতে আরও বলা হয়, চুক্তিটি দুই দেশের ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব এবং ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ভিত্তিতে স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি সামরিক সহায়তা, গোয়েন্দা বিনিময়, যৌথ মহড়া ও প্রশিক্ষণের মতো বিষয়ে সহযোগিতা বাড়াবে।
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তা জানান, এই চুক্তি বহু বছরের আলোচনার ফল। এটি কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়। বরং পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে আনা হয়েছে।
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, চুক্তিটি একটি বিস্তৃত প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো তৈরি করেছে, যা সব ধরনের সামরিক কৌশলকে অন্তর্ভুক্ত করে।
সম্প্রতি দোহায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে আয়োজিত আরব-ইসলামি দেশগুলোর জরুরি সম্মেলনের পরপরই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায়, সেটিকে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/শআ