ঢাকার আকাশে টার্বুলেন্সের শিকার হয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ। ৯ সেকেন্ড ধরে স্থায়ী সেই টার্বুলেন্সের তীব্র ঝাঁকুনিতে পড়ে গিয়ে হাত ভেঙেছে এক কেবিন ক্রুর। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালেও তারা নিরাপদে ছিলেন। গতকাল বেলা ১১টার কিছু সময় পর বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০১২৮ ফ্লাইট এই দুর্ঘটনার শিকার হয়। বোয়িং ৭৩৭ মডেলের উড়োজাহাজটি দুবাই থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় ফিরছিল।
ফ্লাইটের যাত্রী ও বিমানকর্মী সূত্রে জানা গেছে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদ অবতরণের পর দুর্ঘটনার শিকার কেবিন ক্রু শাবামা আজমী মিথিলাকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) নিয়ে যাওয়া হয়। এক্স-রে পরীক্ষায় দেখা গেছে, তার বাম হাতের কনুইয়ের ওপরের হাড় ভেঙে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অঙ্গহানির আশঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, বিমানটি প্রায় ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকাকালে অবতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সে সময় ফ্লাইট স্টুয়ার্ডেস মিথিলা কেবিনে তার রুটিন দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ প্রবল টার্বুলেন্স শুরু হয়, যা প্রায় ছয় সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। সে সময় যাত্রীদের জন্য সিটবেল্টের সতর্কীকরণ সংকেত তখনো চালু হয়নি।
এদিকে হঠাৎ ধাক্কায় মিথিলা ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান এবং সঙ্গে সঙ্গে তার হাত ভেঙে যায়। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কাতর অবস্থায়ও তিনি ফ্লাইটে ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, দুর্ঘটনার পর বিমানবন্দর মেডিকেল সেন্টার থেকে কোনো চিকিৎসক ঘটনাস্থলে আসেননি। এমনকি জরুরি ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্সও সরবরাহ করা হয়নি। বাধ্য হয়ে একজন নারী সহকর্মীর সহায়তায় মিথিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ছুটির দিন হওয়ায় সরকারি পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার কোনো সার্জারি করা হয়নি। শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্লাস্টার দেওয়া হয়েছে। পরে তিনি বাসায় ফিরেছেন।
ফ্লাইটটির ক্যাপ্টেন ছিলেন ক্যাপ্টেন ইন্তেখাব, যিনি ডেপুটি চিফ অব ফ্লাইট সেফটি হিসেবেও কর্মরত। ফ্লাইটে ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন ফ্লাইট পার্সার রনি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম জানান, আমাদের সহকর্মী মিথিলা আবুধাবি ফ্লাইটে ফেরার পথে টার্বুলেন্সে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। বিমানবন্দর থেকে তাকে সরাসরি পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।