বিশ্ব মহাসাগর রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চুক্তি ‘হাই সিস ট্রিটি’ (High Seas Treaty) আগামী জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে। ৬০তম দেশ হিসেবে মরক্কো এ চুক্তি অনুমোদন দেওয়ায় এটি এখন আন্তর্জাতিক আইনে পরিণত হলো।
দুই দশকের আলোচনার পর স্বাক্ষরিত এ চুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পানিসীমার একটি বড় অংশকে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকায় রূপান্তর করা হবে। বর্তমানে উচ্চ সমুদ্রের মাত্র ১% সুরক্ষিত, যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে ঝুঁকিতে ফেলছে। নতুন চুক্তি অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক পানিসীমার অন্তত ৩০ শতাংশ সংরক্ষিত করতে হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ মহাসাগর এই চুক্তির আওতায় আসবে এবং বাধ্যতামূলক নিয়মে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
বিশ্বব্যাপী অতিরিক্ত মাছ ধরা, জাহাজ থেকে দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র উষ্ণ হয়ে সামুদ্রিক প্রাণী মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংঘের তথ্য অনুযায়ী, সমুদ্রের প্রায় ১০ শতাংশ প্রজাতি এখন বিলুপ্তির ঝুঁকিতে।
বিশেষজ্ঞরা এটিকে ‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করছেন। বিশ্ব প্রকৃতি তহবিল ও গ্রিনপিস একে মহাসাগর রক্ষার জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছে। তারা বলছে, এটি প্রমাণ করেছে, পরিবেশ সুরক্ষায় দেশগুলো একসাথে কাজ করতে পারে।
চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর সদস্য দেশগুলো নির্দিষ্ট অঞ্চল সংরক্ষণের প্রস্তাব দেবে এবং অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর ভোটে তা অনুমোদিত হবে। যদিও প্রতিটি দেশ নিজস্ব পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করবে, তবুও অন্য দেশগুলো আপত্তি উত্থাপন করতে পারবে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাস্তুতন্ত্র হলো মহাসাগর। এটি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বছরে প্রায় ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলার অবদান রাখে এবং আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের প্রায় ৮০ শতাংশ সরবরাহ করে। সূত্র : বিবিসি
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল