রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বিভিন্ন স্থানে পদ্মা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন তীব্র হয়েছে। পাঁচ দিনের ভাঙনে অন্তত ৫০ বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে আরও শত শত বসতবাড়ি, ফসলি জমি, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে তীরের বাসিন্দাদের।
মুন্সিবাজার এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ৩০ বছর ধরে দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে পদ্মা নদী ভাঙছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙন তীব্র হয়। গতকাল দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সিবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় পদ্মা নদীর ব্যাপক ভাঙন। কয়েক মিনিট পর পর বড় বড় মাটির চাপ নদীতে আছড়ে পড়ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ৩০ বছরে নদীভাঙন রোধে কোনো কাজ করা হয়নি। কৃষক জব্বার মণ্ডল বলেন, রবিবার রাত থেকে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। অন্তত ১০ জন কৃষকের জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এক কৃষকের ৫ বিঘা জমির মধ্যে ৩ বিঘাই নদীতে চলে গেছে। এ কয়দিনে সব মিলিয়ে অন্তত ৫০ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এসব জমিতে পাট, পটোল, ধান ছিল। অনেক জমি নদীভাঙনের শঙ্কায় সার, ওষুধ দেওয়াসহ পরিচর্চা বন্ধ করে দিয়েছেন কৃষকরা। নদীতীরের বাসিন্দারা ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। মুন্সিবাজার গ্রামের বাসিন্দা আজিজ সরদার বলেন, ভাঙন থেকে ৫০ ফুট দূরেই বসতি। শত শত পরিবার বসবাস করে এই এলাকায়। এখানে চারটি প্রাইমারি স্কুল ঝুঁকিতে রয়েছে। বুধবার এনসিপি রাজবাড়ীর নেতারা নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, যেভাবে ভাঙছে, চিঠি চালাচালি করে নদী রক্ষায় কাজ করতে গেলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার বলেন, যেভাবে চোখের সামনে ফসলি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে তা উদ্বেগজনক। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এম এ শামিম বলেন, আমাদের রাজবাড়ী অংশে পদ্মা নদীর দৈর্ঘ্য ৫৭ কিলোমিটার। বর্ষাকালে নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা যায়। বর্তমানে গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে পদ্মা নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে অনেক কৃষিজমি বিলীন হয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। প্রকল্পের অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।