অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান সমসাময়িক ইস্যুতে সামাজিক মাধ্যমে সরব থাকেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়ও সরব ছিলেন।
গত ২১ জুলাই উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের পরদিন সাদিয়া আয়মান নিজের ফেসবুকে লিখেন এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস।
সাদিয়া আয়মান লিখেন, ‘গতকাল (বিমান বিধ্বস্তের দিন) অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছা করছিল, লিখতে পারিনি। বাচ্চাগুলোর জন্য বুক ফেটে যাচ্ছিল। একেকটা বাচ্চার মিসিং পোস্ট দেখেছি আর দোয়া করেছি যেন ওরা বেঁচে ফেরে। এক সময় আমি নিজেও শিক্ষিকা ছিলাম, টিউশন করতাম, কোচিংয়ে পড়াতাম, ছোট ছোট অনেক বাচ্চাদের পড়িয়েছি। এত নিষ্পাপ, ফুলের মতো পবিত্র, পাখির মতো চঞ্চল ওরা! ইচ্ছা করে সারাদিন বুকের মধ্যে জড়িয়ে বসে থাকি। ওদের সাথে সময় কাটালে মনে হয় পৃথিবীটা এখনও কত সুন্দর! কত সহজ সরল! মনে মনে ভাবতাম, আচ্ছা ওরা বড় হলেও কি এরকম সরলই থাকবে? কত শত অবুঝ প্রশ্ন করবে? ভাবতাম, ওরা বড় না হলেই ভালো, এরকম নিষ্পাপ থাকুক আজীবন। গতকালকের (বিমান বিধ্বস্তের দিন) ঘটনার পর যারা আল্লাহর কাছে পাখি হয়ে উড়ে গেছে, মনে হচ্ছে আল্লাহর ওদেরকে ভালোবেসে নিয়ে গেছে, থাকুক ওরা আল্লাহর কাছে ভালো। আদরে থাকবে, যত্নে থাকবে, জান্নাতের পাখি হয়ে থাকবে সোনা বাচ্চাগুলো। বেঁচে থেকে এমনই একদিন না একদিন কোনো না কোনো দুর্ঘটনায় ঠিকই মারা যেত, এই দেশের সিস্টেম কখনও ঠিক ছিল না, ঠিক হবেও না, রাজনীতির জন্য যে কেউ যা ইচ্ছা করতে পারে।’
‘এ দেশে সাধারণ মানুষের জীবনের দাম নেই, এ দেশে সাধারণ মানুষের কান্নার দাম নেই। কী লাভ বেঁচে থেকে? কী পাবে বেঁচে থেকে? কয়েক দিন পর পর এই ঝামেলা, ওই ঝামেলা, মারামারি, কাটাকাটি হতেই থাকে। এগুলো কখনও থামেনি, থামবেও না । যত বড় আর ভালো মানুষই বসুক না কেন চেয়ারে, সবাই-ই বদলে যায়। গতকাল (বিমান বিধ্বস্তের দিন) হাসপাতালে যেখানে একটার পর একটা রোগী আসছে পোড়া শরীর নিয়ে, যেখানে রোগীদের পরিবারের ঠিকমতো ঠাঁই হচ্ছে না, সবাই তাদের আদরের সন্তান কিংবা ভাইবোনকে খুঁজতে অস্থির সেখানে কোনো কোনো ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা যাচ্ছে তাদের দলবল নিয়ে!! একজনের সাথে তারা আরও ১০-২০ জন নিয়ে যাচ্ছে! কেন? সামনে ভোট তাই এখনই শো ডাউন (অফ) করতে হবে! রিকশাওয়ালা, সিএনজি ওয়ালারা ১০০ টাকার ভাড়া ১০০০ টাকা চাইলো, দোকানদাররা পানির দাম ৫০ টাকার জায়গায় ২০০ টাকা চাইলো! এরকম একটা মুমুর্ষ দিনেও তারা মনটা নরম করতে পারল না!’
স্ট্যাটাসের শেষে তিনি আরও লেখেন, ‘ছোট মুখে একটা বড় কথা বলি, “বাংলাদেশের “রাজনীতি কিংবা রাজনীতিবীদ” সবই এখন হাস্যকর হয়ে গেছে”।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ