চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) ভারত সরকার একটি অত্যাধুনিক লাইফ সাপোর্ট সংবলিত অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছিল। কিন্তু এটি এখন অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। ব্যবহার না হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্সের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এখন নষ্ট হওয়ার পথে।
জানা যায়, বৈশ্বিক মহামারি করোনার মোকাবিলায় ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের সময় ১১৯টি বিশেষায়িত অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স উপহারের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এর অংশ হিসেবে ২০২২ সালের ২ জানুয়ারি চসিককে একটি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্সে রোগীদের জরুরি সেবা ও ট্রমা লাইফ সাপোর্ট ব্যবস্থা ছিল। তবে এটি এক দিনের জন্যও ব্যবহার করা হয়নি। সেবা পায়নি কোনো রোগী। কর্তৃপক্ষের কার্যকর ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ, অযত্ন, অবহেলা এবং অব্যবস্থাপনায় এটি চালু করা হয়নি বলে অভিযোগ নগরবাসীর।
আন্দরকিল্লা এলাকার বাসিন্দা এস এম ইরশাদুল আলম বলেন, চসিকের উদ্যোগে অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করা গেলে মুমূর্ষু রোগীরা সেবা পেতেন। কিন্তু এটি চালু না করায় নষ্ট হওয়ার পথে। চসিক চাইলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে এটিকে সচল করতে পারত।
চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইমাম হোসেন রানা বলেন, আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে প্রয়োজনীয় অনেক সাপোর্ট ছিল না। একবার একটি মুমূর্ষু রোগীকে ঢাকা নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েও সাপোর্ট না থাকার কারণে নেওয়া যায়নি। পরে আমরা এটিকে সাধারণ অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহার করার চিন্তাও করছিলাম। তবে সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। এখন সেটি পড়ে আছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে। জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্সটি অভিজ্ঞ চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত নার্স, চালক ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই পড়ে রয়েছে অচল অবস্থায়। নেই পর্যাপ্ত জ্বালানি, নেই চিকিৎসক ও চালক, অপারেটর এবং প্রয়োজনীয় ব্যয় বরাদ্দ। ফলে প্রায় কোটি টাকার আধুনিক যানটি সেবার বাইরে থেকে গেছে। রোগী পরিবহনকালে এখানে দরকার সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক।
তবে চিকিৎসকরা মনে করেন, এমন লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স সাধারণ পরিবহনের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি চলমান অবস্থায় রোগীকে অক্সিজেন, ভেন্টিলেশনসহ জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে সক্ষম। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদটি গত চার বছর ধরে পড়ে আছে।