গান, নাচ, আড্ডা আর স্মৃতিচারণায় ভরপুর এক রঙিন সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছেন রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাসরত বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে ভাটারা এলাকার ওয়াটার পোলো রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এই মিলনমেলা চলে রাত ১১টা পর্যন্ত।
শুরু থেকেই নানা ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও তাঁদের পরিবারের উপস্থিতিতে জমে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল। নবম ব্যাচ থেকে শুরু করে ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী- সবাই মিলে যেন এক অদ্ভুত নস্টালজিয়ায় হারিয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত মুখগুলোকে দীর্ঘদিন পর একসঙ্গে পেয়ে অনুষ্ঠানটি মুহূর্তেই পরিণত হয় নবীন-প্রবীণের এক উষ্ণ মিলনমেলায়।
কেক কাটায় শুরু—স্মৃতিচারণে আবেগঘন মুহূর্ত
অনুষ্ঠানটি সাজানো হয় কয়েকটি পর্বে। কেক কাটার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। সিনিয়র ও জুনিয়রদের একসঙ্গে কেক কাটার দৃশ্যটিই যেন প্রতীক হয়ে উঠে ‘চবিয়ান’ পরিচয়ের চিরায়ত বন্ধনের।
এরপর শুরু হয় স্মৃতিচারণ পর্ব। বিভিন্ন ব্যাচের অংশগ্রহণে এই পর্ব হয়ে ওঠে সবচেয়ে আবেগঘন। কেউ বললেন শাটল ট্রেনের স্মৃতির কথা, কেউ বললেন হল জীবনের দুষ্টুমিভরা দিনগুলো নিয়ে; কেউ বা হারিয়ে গেলেন ঝুড়পির আড্ডায় কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো অবিস্মরণীয় মুহূর্তে। স্বর্ণালী সেই ক্যাম্পাস জীবনের কথা বলতে গিয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
সংগীত–নৃত্যে মুখর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা
স্মৃতিচারণের পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিভিন্ন ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অতিথি শিল্পীরাও অংশ নেন পরিবেশনায়। ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘সব ভালো তুই একা বাসিস নে’, ‘শালুক ফুল’, ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা’, ‘আজ জন্মদিন তোমার’ সহ একের পর এক জনপ্রিয় গানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো আয়োজন। সুরের মূর্ছনায় যেন মিলেমিশে যায় অতীত ও বর্তমান।
ডিনারে সমাপ্তি, বন্ধন আরও দৃঢ় করার প্রত্যয়
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মিলনমেলা একসময় ডিনারের মধ্য দিয়ে পরিসমাপ্তি পায়। আড্ডা, আবেগ ও আনন্দের রঙে রঙিন এই আয়োজন শেষে উপস্থিত চবিয়ানরা ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এমন অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। নিজেদের মধ্যে আরও সুদৃঢ় সম্পর্ক স্থাপনে একে অন্যের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানান। শতাধিক সাবেক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি চবিয়ানদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী প্রাক্তন চবিয়ানরা নিয়মিত আয়োজন করে আসছেন নানান অনুষ্ঠান। প্রতিবছর আয়োজন করা হয় ফ্যামিলি নাইট, পিকনিক, ফল উৎসব, পহেলা বৈশাখ উদযাপন, শীতের ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টসহ জাতীয় দিবসগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসা আর পারস্পরিক বন্ধনকে ধরে রাখতে এসব আয়োজন ইতিমধ্যেই পরিণত হয়েছে এক ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটির প্রতীক হিসেবে।
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ