চলতি বছর দেশের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ কোটি ৩০ লাখ কেজি। বছরের প্রথমার্ধে উৎপাদন ইতিবাচক থাকলেও শেষভাগে এসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। চা বোর্ডের হিসাব বলছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে ৬ কোটি ৯ লাখ ১২ হাজার কেজি। লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বাকি তিন মাসে উৎপাদন করতে হবে আরও ৪ কোটি কেজির বেশি চা।
চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন এসইউপি বলেন, ‘আগের বছরগুলোতে উৎপাদন বাড়াতে অতিরিক্ত চাপ দেওয়া হতো। ফলে অধিক উৎপাদন হলেও নিলামে দাম মিলত না, মানও কমে যেত। এখন উৎপাদনের চেয়ে মান বৃদ্ধিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’ এজন্য কিছুটা উৎপাদন কমলেও দীর্ঘমেয়াদে বাগান মালিক ও ভোক্তা দুই পক্ষই উপকৃত হবেন বলে তিনি মনে করেন। তিনি জানান, লালমনিরহাটসহ নতুন এলাকায় চা চাষে আগ্রহ বাড়াতে চা বোর্ডের বিশেষ ফান্ড দেওয়া হয়েছে। সিলেট অঞ্চলের বাগানে মানোন্নয়নের কারণে নিলামে দামও বেড়েছে। এতে বাগান মালিকদের আস্থা ফিরেছে, কমেছে কালোবাজারিও। তাঁর দাবি, বছর শেষে সমগ্র খাতে ৩০-৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পাওয়া যাবে। তবে সংশ্লিষ্টদের মতে উৎপাদন কমে যাওয়ার পেছনে শ্রমিক অসন্তোষ একটি বড় কারণ। অনেক বাগান মালিক সময়মতো ব্যাংক ঋণ না পাওয়ায় বাগানে বিনিয়োগ ও শ্রমিক বেতন দিতে পারেননি। এতে কয়েকটি বাগান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে কিছু এলাকায় মান উন্নত হলেও অন্যত্র উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
চা নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্রোকার্সের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অঞ্জন দেব বর্মণ বলেন, ‘গত বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না থাকায় লক্ষ্য অর্জন হয়নি। এবার মান ভালো হওয়ায় নিলাম কেন্দ্রে চায়ের সরবরাহ বেড়েছে, যা বাজারের জন্য ইতিবাচক।’ চা বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালে রেকর্ড ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল। ২০২৪ সালে বিভিন্ন প্রতিকূলতায় উৎপাদন নামে ৯ কোটি ৩০ লাখ কেজিতে। চলতি বছর আবারও ১০ কোটি কেজির বেশি উৎপাদন লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে।