রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) পোশাকসামগ্রী দরপত্রে পিপিআর আইন-২৫ লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠেছে। পিপিআর আইনে ইজিপি টেন্ডারে সরাসরি স্যাম্পল জমা দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। তবে এই শর্ত ভঙ্গ করে সুনির্দিষ্ট একটি পক্ষ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে আরএনবি চিফ কমান্ড্যান্ট দপ্তরে এসে স্যাম্পল জমা দেওয়ার শর্ত দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে করে সাধারণ ঠিকাদাররা স্যাম্পল জমা দিতে পারছে না স্থানীয় সন্ত্রাসীদের বাধার কারণে। ফলে প্রতিযোগিতামূলক ধরে রেলওয়ে পণ্য ক্রয়ে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিযোগতামূলক টেন্ডার না হলে সরকারও রাজস্ব হারাবে।
জানা যায়, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০২৫ অনুযায়ী সরকারি পণ্য ক্রয়ে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে সরাসরি স্যাম্পল নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু এই নিয়মের কোনো তোয়াক্কা না করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) গত ৫ নভেম্বর একটি ই-জিপি দরপত্র প্রকাশ করে। এতে আরএনবির ২৪৮৬ মিটার নেভি ব্লু কাপড়, যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১৬ লাখ টাকা। ৩২১১ মিটার জলপাই সবুজ কাপড়, যার আনুমানিক মূল্য ২১ লাখ টাকা। ৪৯১ জোড়া বুট জুতা (ডিএমএস), যার আনুমানিক মূল্য ১৮ লাখ। ১০৫১ জোড়া ক্যানভাস-সু/কেডস এবং ১০৩৬ জোড়া মোজা যার আনুমানিক মূূল্য ৭ লাখ ৭০ ও ১০৪৪টি ব্যারেট ক্যাপ যার আনুমানিক মূল্য ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকাসহ পাঁচটি পণ্যের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে। ই-জিপি টেন্ডার হওয়ার কারণে ঠিকাদাররা অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত হয়। তবে আরএনবির টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিতে চারটি শর্ত দেয়, যার একটিতে ঠিকাদারকে প্রতিটি মালামালের নমুনা (স্যাম্পল) দরপত্র খোলার পূর্বে দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জমা দিতে না পারলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এই নির্দেশনার মাধ্যমে পিপিআর আইন-২০২৫ লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। রেলওয়ে ওয়ার্ক ম্যানেজার পাহাড়তলীতে বর্তমানে ইজিপি টেন্ডারের আরেকটি দরপত্র আহ্বান করা হলেও সেখানে কোনো স্যাম্পল জমা দেওয়ার নির্দেশনা নেই। এতে করে সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায়, একই প্রতিষ্ঠানে দুই ধরনের নিয়ম করে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।
আরএনবি পূর্বাঞ্চলের চিফ কমান্ড্যান্ট আশাবুল ইসলাম বলেন, পিপিআর লঙ্ঘন হচ্ছে কি না আমার জানা নেই। তবে আমরা নিরপেক্ষ ভাবে টেন্ডার আহ্বান করেছি কারও পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে না। তবে এর আগে তিনি স্বীকার করেছিলেন যে, কয়েকজন ঠিকাদার স্যাম্পল জমা দিতে পারছেন না, যা তাঁকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হলেও ভয়ে কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ জমা দেয়নি। এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম মোহাম্মদ সবুক্তগীনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।