সিলেট নগরীর অনেক আবাসিক হোটেল হয়ে উঠেছে অনৈতিক কাজের আখড়া। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার অভিযান পরিচালনার পরও হোটেল কর্তৃপক্ষ বন্ধ করেনি এসব অনৈতিক কাজ। এতে পুণ্যভূমি সিলেটের মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। এমতাবস্থায় কঠোর অ্যাকশনে নেমেছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। অনৈতিক কাজের প্রমাণ পেলেই সিলগালা করে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট হোটেল।
সিলেটের কিছু হোটেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ অনেক পুরোনো। প্রায়ই পুলিশ এসব হোটেলে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে অভিযুক্ত নারী-পুরুষকে আটক করে। আটকের পর আইনের ফাঁক দিয়ে সহজেই এরা বের হয়ে আসে। অভিযোগ রয়েছে- যেসব নারী আটক হন সংশ্লিষ্ট হোটেল কর্তৃপক্ষই আদালত থেকে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। এরপর ফের শুরু হয় একইরকম অনৈতিক কাজ।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ও মিডিয়া অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেট মহানগরীতে অসামাজিক কর্মকাণ্ড রোধে আমরা সর্বদা সচেষ্ট। নগরীর বিভিন্ন হোটেলে অভিযান চালিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হোটেলগুলো সিলগালা করা হয়েছে
এসএমপিতে কমিশনার হিসেবে আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী যোগদানের পর সিলেটের আবাসিক হোটেল মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে সিলেটের হোটেলগুলো অনৈতিক কর্মকাণ্ডমুক্ত রাখার আহ্বান জানান। কিন্তু পুলিশ কমিশনারের এই নিদের্শনা আমলে নেননি অনেক হোটেল মালিক। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা ঠিকই হোটেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের আসর বসিয়ে আসছিলেন। দিন দিন এসব কর্মকাণ্ড বাড়তেই থাকে। শুরুতে হোটেলগুলোতে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার ঘটনায় অভিযুক্তদের আটক করত পুলিশ। কিন্তু তাতেও ফল না পাওয়ায় পুলিশ আরও কঠোর অ্যাকশনে যায়। এক মাস ধরে কোনো হোটেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পেলেই সেটি সিলগালা করে দেওয়া হচ্ছে।
সিলেট নগরীতে সর্বশেষ গত সপ্তাহে অভিযান চালানো হয় জিন্দাবাজারের হোটেল রাজমণিতে। জিন্দাবাজার পয়েন্ট-সংলগ্ন এই হোটেলে পুলিশ ও জনসাধারণের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ কর্মকাণ্ডের সুযোগ করে দিচ্ছিল কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে ও হোটেলটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। এর আগে গেল প্রায় দুই সপ্তাহে একই অপরাধে সিলেট নগরীর আরও পাঁচটি হোটেল সিলগালা করে পুলিশ।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ও মিডিয়া অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেট মহানগরীতে অসামাজিক কর্মকাণ্ড রোধে আমরা সর্বদা সচেষ্ট। নগরীর বিভিন্ন হোটেলে অভিযান চালিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হোটেলগুলোকে সিলগালা করা হয়েছে। পাশাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই নগরবাসী যাতে নিরাপদ এবং নৈতিকভাবে সুরক্ষিত পরিবেশে থাকতে পারেন। তাই এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।’