দেশের বিভিন্ন ব্লকে গ্যাস অনুসন্ধানে ১০০ নতুন কূপ খনন কার্যক্রম জোরদার করেছে পেট্রোবাংলা।
বুধবার বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন-পেট্রোবাংলার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের বর্তমান জ্বালানি সংকট নিরসনে দেশীয় উৎস হতে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করে জ্বালানির চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে স্থিতিশীল ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পেট্রোবাংলা বদ্ধপরিকর।
এ লক্ষ্যে পেট্রোবাংলা থেকে ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ৫০টি ও ২০২৬-২৮ সালের মধ্যে ১০০টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কর্মপরিকল্পনাসহ দেশের বিভিন্ন ব্লকে অনুসন্ধান ও নতুন কূপ খনন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) থেকে জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খননের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মত ব্লক-৮ এ বাণিজ্যিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে।
জামালপুর স্ট্রাকচারে গ্যাসের রিজার্ভের পরিমাণ ও বিস্তৃতি মূল্যায়নের লক্ষ্যে আরো দু’টি (একটি উন্নয়ন ও একটি অনুসন্ধান) কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করত : তদানুযায়ী ডিপিপি প্রণয়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এছাড়াও সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) অন্তর্গত হরিপুর গ্যাস ফিল্ডে সিলেট-১০ কূপ খননের সময় উক্ত এলাকায় জ্বালানি তেলের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
হরিপুর স্ট্রাকচারে মজুদকৃত জ্বালানি তেলের বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন নিশ্চিত হওয়ার লক্ষ্যে সিলেট-১২ তেল কূপ খননের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ দ্বীপ ভোলা এলাকায় প্রাপ্ত গ্যাসের মজুদ ও বিস্তৃতি নির্ণয়ের লক্ষ্যে উক্ত এলাকায় আরও ১৯টি নতুন কূপ খননের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ভোলা এলাকায় প্রাপ্ত গ্যাস ভোলায় প্রতিষ্ঠিতব্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব এ সরবরাহ করা হবে, যা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কর্মস্থানসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়াও আবিষ্কৃত ভূতাত্ত্বিক স্ট্রাকচারের গভীর স্তরে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ মূল্যায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) আওতায় তিতাস ও বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডে দু’টি এবং বাপেক্সের আওতায় শ্রীকাইল গ্যাস ফিল্ড ও মোবারকপুর স্ট্রাকচারে দু’টিসহ মোট চারটি গভীর কূপ খননের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন ব্লকে নতুন নতুন লিড/প্রসপেক্টসহ খননযোগ্য কূপের লোকেশন চিহ্নিতকরণের জন্য বাপেক্স, বিজিএফসিএল ও এসজিএফএল’র স্ব-স্ব ব্লকে সাইসমিক ডাটা আহরণ ও বিশ্লেষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সময়াবদ্ধ পরিকল্পনার মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য বাপেক্স’র নিজস্ব পাঁচটি রিগ এবং টার্ন কি পদ্ধতিতে নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারের তিনটি রিগসহ মোট আটটি রিগ এর মাধ্যমে কূপ খনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আগামী ২৭ নভেম্বর হতে টার্ন কি পদ্ধতিতে নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারের রিগ দিয়ে তিতাস-২৮ উন্নয়ন কূপ খনন কার্যক্রম শুরু হবে। ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে বিজিএফসিএল’র সঙ্গে টার্ন কি পদ্ধতিতে নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারের আরো একটি রিগের মাধ্যমে তিতাস-৩১ ডিপ অনুসন্ধান কূপের খনন কার্যক্রম শুরু করার প্রত্যয়ে পেট্রোবাংলা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এছাড়াও, ভোলা এলাকায় পাঁচটি কূপ খননের লক্ষ্যে বাপেক্স ও টার্ন কি পদ্ধতিতে নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারের মধ্যে অতি শিগগিরই চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। ফলে ভোলা এলাকায় কূপ খননের লক্ষ্যে আরো একটি রিগ নিয়োজিত হবে।
আশা করা যাচ্ছে, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মধ্যে বাপেক্সের পাঁচটি রিগ এবং টার্ন কি পদ্ধতিতে নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারের ছয়টি রিগসহ মোট ১১টি রিগ এর মাধ্যমে একই সঙ্গে মোট ১১টি কূপের খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম চলমান থাকবে।
বাপেক্স থেকে খনন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বাপেক্সের পাঁচটি রিগের পাশাপাশি আরো দু’টি নতুন রিগ ক্রয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উল্লিখিত, ১১টি কূপের খনন কার্যক্রমের সফল সমাপ্তিতে আনুমানিক দৈনিক ১৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংস্থান নিশ্চিত করা যাবে মর্মে আশা করা যায়।
ফলশ্রুতিতে দেশের নিজস্ব গ্যাস ক্ষেত্রসমূহ হতে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে, যা দেশের বিদ্যমান গ্যাস সংকট হ্রাস করে দেশের অর্থনীতিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত