বাগেরহাটের চিতলমারীতে কিস্তি দিতে না পারায় নিয়ে যাওয়া গৃহবধূ শ্রাবণীর বদনা, নাকফুল ও আংটি ফেরত দিয়েছেন ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের (ডিএফইডি) কর্মকর্তারা। এই অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সংস্থাটি সংশ্লিষ্ট শাখার ম্যানেজার বাসুদেব দেবনাথ এবং মাঠকর্মী নেওয়াজ শরীফকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
এনজিওর কর্মকর্তারা মঙ্গলবার গৃহবধূ শ্রাবণী হীরার বাড়িতে গিয়ে তার বদনা, নাকফুল, আংটি এবং দুটি ফাঁকা স্ট্যাম্প ফেরত দেন। নিজের শখের জিনিসগুলো ফিরে পেয়ে খুশি শ্রাবণী।
শ্রাবণী হীরা বলেন, বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এনজিওর কয়েকজন কর্মকর্তা আমার বাড়িতে আসেন। তারা আমার পরিবারের খোঁজখবর নেন। পরে অফিসে নিয়ে গিয়ে বদনা, নাকফুল, আংটি ও দুটি ফাঁকা স্ট্যাম্প ফেরত দেন। স্যারদের আচরণে আমি সন্তুষ্ট।
ডিএফইডির নরসিংদী জোনের ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আমরা শ্রাবণীর বাড়িতে যাই এবং তার জিনিসগুলো ফেরত দিই। শ্রাবণী হীরা জানিয়েছেন, তিনি সুবিধামতো সময়ে ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন। কোনো জোরজবরদস্তি করা হয়নি; তিনি স্বেচ্ছায় কিস্তির টাকার বদলে জিনিসগুলো দিয়েছিলেন।
তৌহিদুল ইসলাম আরও জানান, এ ঘটনায় চিতলমারী শাখার ম্যানেজার বাসুদেব দেবনাথ ও মাঠকর্মী নেওয়াজ শরীফকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার সাহিদুল কবীর।
কমিটির সদস্যরা হলেন—সহকারী ব্যবস্থাপক মনিরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জোনাল ম্যানেজার খায়রুল ইসলাম এবং এমআইএস কো-অর্ডিনেটর আব্দুর রাজ্জাক। সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চিতলমারী শাখা থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন শ্রাবণী হীরা। তার স্বামী রিপন রায় কাজের জন্য এলাকায় না থাকায় কিস্তি বকেয়া পড়ে যায়। গত ২৯ অক্টোবর সকালে এনজিও কর্মীরা তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে দুটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে হাতের আংটি, নাকফুল ও পিতলের বদনা নিয়ে গেলে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
বিডি-প্রতিদিন/সুজন