বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলার ৮০ বছর পূর্তিতে জাপানের হিরোশিমা নগরীর মেয়র কাজুমি মাতসুই বিশ্ব নেতাদের আজও বিদ্যমান পারমাণবিক বোমাগুলোর বিষয়ে সতর্ক করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, এখনো পারমাণবিক অস্ত্রের ঝুঁকিতে বিশ্ব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র ‘লিটল বয়’ নামের একটি ইউরেনিয়াম বোমা ফেলে জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হিরোশিমাকে ধুলার সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। এতে তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ৭৮ হাজার মানুষ নিহত হন।
গতকাল ওই ভয়াবহ হামলার ৮০ বছর পূর্তির দিনটিতে হিরোশিমায় কয়েক হাজার মানুষ শান্তির জন্য প্রার্থনায় মিলিত হন। তারা মাথা ঝুঁকিয়ে পারমাণবিক বোমা হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। মেয়র কাজুমি বিশ্ব নেতাদের হিরোশিমা ও নাগাসাকি থেকে শিক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বিশ্বব্যাপী সামরিক শক্তি বৃদ্ধির প্রবণতার পরিণতির বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বের ৯০ শতাংশ পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত আছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ায়। কাজুমি বলেন, ‘বিশ্বের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বাড়তে থাকা বিশ্বাস হচ্ছে, তাদের নিজেদের দেশকে রক্ষার জন্য পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হওয়া অপরিহার্য। এই পরিস্থিতি অতীতের শোচনীয় ইতিহাস থেকে বিশ্ব সম্প্রদায় যে শিক্ষা পেয়েছে শুধু তাই বাতিল করে না, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গড়ে তোলা কাঠামোগুলোকেও মারাত্মকভাবে দুর্বল করে। ‘বিশ্বের সব নেতাদের বলছি, অনুগ্রহ করে হিরোশিমা পরিদর্শন করুন এবং পারমাণবিক বোমা হামলার বাস্তবতার চাক্ষুষ সাক্ষী হোন।’ রয়টার্স জানিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে হিরোশিমা জাপানি সামরিক বাহিনীর কিছু ইউনিটের সদর দপ্তর আর একটি প্রধান সরবরাহ ঘাঁটি ছিল। মার্কিন যুদ্ধ পরিকল্পনাকারীরা হিসাব করে দেখেছিলেন, শহরটি পর্বতঘেরা হওয়ায় তা বোমার শক্তিকে নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে আটকে রেখে ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। ‘এনোলা গে’ নামের একটি বিমান থেকে ‘লিটল বয়’কে ফেলার পর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে ৪০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায় আর তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হয়ে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। -রয়টার্স