ইলিশ উৎপাদনে ১১ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। ওয়ার্ল্ড ফিশের পরিসংখ্যান মতে, বিশ্বের ৮৬ শতাংশ ইলিশ বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ইলিশের দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় মধ্যম আয়ের মানুষ বাধ্য হয়ে ইলিশ কেনা প্রায় বন্ধই করে দিয়েছেন। নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো তো ইলিশের স্বাদ ভুলেই গেছেন। এখন তারা ইলিশ মাছের মাথা-লেজের মধ্যে ইলিশের স্বাদ খোঁজছেন। এখন বাজারে ইলিশ মাছের মাথা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮০০ টাকায়। বাজারে এখন মাছের পাশাপাশি মাছের মাথা ও লেজও বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে।
সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৫-৬ পিসের এক কেজি ইলিশ মাছের লেজ মাথা ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একটু নিম্নমানের মাথা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। সেখানে দুই স্থানে অন্তত দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে ৭ ক্রেতাকে ইলিশ মাছের মাথা কিনতে দেখা যায়। এর মধ্যে রাবেয়া আক্তার নামের এক নারী দুই মাথা ও একটি লেজ মিলিয়ে ৫০০ গ্রাম কেনেন। তার মতো শফিক হোসেন নামের আরেক ক্রেতা ২ কেজি ও দুলাল নামের এক ক্রেতা ১ কেজি ইলিশের মাথা কিনেন। জানতে চাইলে দুলাল হোসেন নামের ক্রেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অন্যান্য মাছ কেনা হয়, কিন্তু দুই-আড়াই হাজার টাকা খরচ করে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ কেনা সম্ভব হয়ে ওঠে না। যেহেতু বড় ইলিশের মাথা ও লেজ বিক্রি হচ্ছে। তাই বড় ইলিশের স্বাদে গন্ধের পার্থক্য নিতে কিছুটা নিয়ে নিলাম। এদিকে সরেজমিনে দেখা যায় বাজারে প্রতি কেজি কাতল মাছের মাথা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, ছোট রুই মাছের মাথা ১২০ থেকে ১৫০ টাকা ও পাঙাশ মাছের মাথা ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চাঁদপুরের সিন্ডিকেট ও দাদন ব্যবসায়ীদের জন্য ইলিশের দাম বেড়েছে। তবে দামের উলম্ফনের জন্য দেশের বহু মানুষ ইলিশের স্বাদ কী- তা ভুলেই গেছে। সেই ক্ষেত্রে ইলিশের মাথা চড়া দামে বিক্রি হওয়া নিঃসন্দেহে নিম্নআয়ের মানুষের দুঃখের কথা বলে। এই পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ একমাত্র মৎস্য অধিদপ্তরের হাতেই রয়েছে।