উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি তার দেশের ওপর পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের দাবি বাদ দেয়, তবে আলোচনায় বসতে তার কোনো আপত্তি নেই। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে হলেও উত্তর কোরিয়া কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না।
সোমবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ (KCNA) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
রবিবার সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেম্বলিতে দেওয়া ভাষণে কিম বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি এখনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের সুন্দর স্মৃতি মনে করি।” কিম ও ট্রাম্পের মধ্যে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিন দফা বৈঠক হয়েছিল।
কিমের মন্তব্য আসে এমন সময়ে, যখন সিউলের নতুন উদারপন্থী সরকার ট্রাম্পকে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপ পুনরায় শুরু করার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ২০১৯ সালে নিষেধাজ্ঞা ও পারমাণবিক অস্ত্র ভাঙার ইস্যুতে আলোচনার টেবিল ভেঙে পড়ার পর এটাই প্রথমবার কিম সরাসরি ট্রাম্পের নাম উচ্চারণ করলেন।
“যদি যুক্তরাষ্ট্র আমাদের নিরস্ত্রীকরণের বিভ্রান্তি ছেড়ে বাস্তবতা মেনে নেয় এবং প্রকৃত শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে আগ্রহী হয়, তবে আলোচনায় বসতে কোনো বাধা নেই,” বলেন কিম।
মার্কিন ভিত্তিক থিংকট্যাংক স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরিয়া বিশেষজ্ঞ র্যাচেল মিনইয়ং লি বলেন, “এটি একধরনের প্রস্তাব। কিম মূলত ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন মার্কিন নীতি নতুনভাবে ভাবার জন্য।”
তবে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপে অনীহা প্রকাশ করেন কিম। তিনি দক্ষিণ কোরিয়াকে “প্রধান শত্রু” আখ্যা দিয়ে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া আসলে পারমাণবিক যুদ্ধের প্রস্তুতি। তাই পারমাণবিক অস্ত্র উত্তর কোরিয়ার অস্তিত্ব রক্ষার জন্য অপরিহার্য।
অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, উত্তর কোরিয়া বছরে ১৫–২০টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করছে। তার মতে, অন্তত এই উৎপাদন স্থগিত করাও ভবিষ্যতে নিরস্ত্রীকরণের দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। তবে কিম ধাপে ধাপে সমাধানের প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কিম বলেন, “বিশ্ব জানে, কোনো দেশ নিরস্ত্রীকরণে রাজি হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র কী করে। তাই আমরা কখনো পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়ব না।”
নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে কিম আরও বলেন, “নিষেধাজ্ঞা আমাদের জন্য শিক্ষা হয়েছে। এতে আমরা আরও শক্তিশালী ও সহনশীল হয়েছি।”
সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/আশিক