জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটার দিকে তিনি ও তার সফরসঙ্গীরা নিউইয়র্কে পৌঁছান।
প্রধান উপদেষ্টা রবিবার দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। সফরকালে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন।
সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে বিভিন্ন ইভেন্টেও অংশ নেবেন। তার সফরসঙ্গী হয়েছেন ছয়জন রাজনৈতিক নেতা। তারা হলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির এবং জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ড. নকিবুর রহমান তারেক, যিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকেই প্রতিনিধিদলে যোগ দেবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বছরের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে ‘হাই লেভেল কনফারেন্স অন দ্য সিচুয়েশন অব রোহিঙ্গা মুসলিমস অ্যান্ড আদার মাইনোরিটিস ইন মিয়ানমার’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘে এমন উচ্চ পর্যায়ের সভা এবারই প্রথম আয়োজন করা হচ্ছে।
উচ্চ পর্যায়ের সভা থেকে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের একটি কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে আন্তর্জাতিক অংশীদার ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। অধ্যাপক ইউনূস গত বছর জাতিসংঘে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্মেলন আয়োজনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাব সদস্য রাষ্ট্রগুলো সর্বসম্মতিক্রমে সমর্থন দিয়েছেন।
এছাড়া অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন ও জলবায়ু ন্যায়বিচার, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, অবৈধ অর্থপাচার, নিরাপদ অভিবাসন ও অভিবাসী অধিকার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে টেকসই প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠাসহ বিশ্বের নানা ইস্যু তুলে ধরবেন।
সফরের শেষে আগামী ২ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।