জুলাই আন্দেলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হওয়া পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শহীদ জসিম উদ্দিন হাওলাদারের কন্যা কলেজছাত্রী লামিয়া আক্তার (১৭) অবশেষে বাবার কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন। কবর খুরছেন লামিয়ার দাদা সোবাহান হাওলাদার।
আজ রোববার (২৭ এপ্রিল) বিকেল অনুমান চারটার দিকে পটুয়াখালীর পাংগাশিয়া ইউনিয়নে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে। ইতোমধ্যে কবর খোঁড়া ও জানাজার স্থান প্রস্তুতের কাজ করা হচ্ছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে লাশ নিয়ে রওনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
লামিয়ার জানাজায় অংশ নিতে পটুয়াখালী আসছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। জেলা বিএনপির নেতা ও পটুয়াখালী জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাড. মজিবুর রহমান টোটন জানান, রিজভী ভাই ইতোমধ্যে বরিশালে পৌঁছেছেন এবং লামিয়ার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে জানাজায় অংশ নেবেন তিনি।
এর আগে, শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার ৬ নম্বর রোডের একটি ভাড়া বাসা থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় লামিয়ার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১৮ মার্চ পটুয়াখালীর পাংগাশিয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে লামিয়া সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে তিনি নিজেই বাদী হয়ে থানায় গিয়ে অভিযুক্তদের দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে দুমকি থানা পুলিশ অভিযুক্ত শাকিব ও সিফাতকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
শহীদ জসিম উদ্দিনের চাচাতো ভাই মো. কালাম হাওলাদার বলেন, "আমাদের লামিয়া অত্যন্ত সাহসী মেয়ে ছিল। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সে বুক চিতিয়ে লড়েছিল। কিন্তু বিচারহীনতার ভয়, সমাজের অবজ্ঞা ও মানসিক চাপ তাকে ভেঙে দিল। আজ সে আমাদের ছেড়ে চলে গেল। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করি এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি।"
পটুয়াখালীর দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, "সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লামিয়ার ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।"
গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জসিম হাওলাদার।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন/হিমেল