বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ছাত্রদের কাজ ক্যাম্পাসে, মন্ত্রণালয়ে নয়। এখন দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ছাত্র সংগঠনের কমিটি দেওয়া হচ্ছে। এতে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। সমাজের সুবিধাভোগী শ্রেণি ছাত্রদের বিপথে পরিচালিত করছে, প্রলোভনে ফেলছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদের মিথ্যা মামলায় ৬০ লাখ আসামি, মুক্তি কতদূর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এ এস এম আমানুল্লাহ, বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজীজুল বারী হেলাল, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ, নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন, ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক সৈয়দ আবদাল আহমদ, সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
রিজভী বলেন, ‘আমরা শুনেছি প্রধান উপদেষ্টার সব মামলা প্রত্যাহার হয়ে গেছে। উনিও শেখ হাসিনার ঈর্ষা, বিদ্বেষ এবং আক্রোশের শিকার হয়েছেন। আমরাও আন্দোলন সংগ্রামে থেকেছি, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছি। দু-এক জন উপদেষ্টাও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মামলা যদি প্রত্যাহার হয়ে থাকে তাহলে এ লাখ লাখ মানুষের গুলো কেন হচ্ছে না?’ অতিদ্রুত এ মামলাগুলো নিষ্পত্তির আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা মাদকসম্রাজ্ঞীদের এমপি বানাতেন। গডফাদার ও মাদক কারবারিই ছিলেন তার কাছে বেশি সম্মানিত। আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী এস আলম, সালমান এফ রহমানসহ যারা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ তাদের টাকা পাচারের ঘটনা সিন্দবাদের গল্পকে হার মানিয়েছে। নতুন রূপকথার গল্প বাংলাদেশের মানুষ শুনেছে। গল্পটি রূপকথার মতো হলেও এগুলো সত্য ও বাস্তব।’ যেখানে মার্কিনিরা ফ্ল্যাট কিনতে সাহস পায় না, সেখানে শেখ হাসিনার মন্ত্রী- এমপিরা ফ্ল্যাট কিনেছেন জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘শেখ পরিবারের টিউলিপ সিদ্দিকও এখান থেকে মুক্ত নন, তিনি আবার লন্ডনের এমপি! শেখ হাসিনা তো নিজেই গর্ব করে বলতেন তার পিয়ন নাকি বাড়িতে হেলিকপ্টার ছাড়া যায় না, সে নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক। তার ঘনিষ্ঠ এস আলম তার বাড়ির কাজের লোককে দিয়ে একটি ব্যাংকের শাখা থেকে ২ হাজার কোটির বেশি টাকা ঋণ নিয়েছেন। শেখ হাসিনা দেশ থেকে জনগণের টাকা লুট করে পুঞ্জীভূত করে পাচার করেছেন। কিছু টাকা দেশে আছে, যেটি বিভিন্ন অপকর্ম করতে ব্যবহার হচ্ছে, আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের নামে ৬০ লাখ মামলা, জানি না এগুলো প্রত্যাহার হয়েছে কি না। প্রায়ই উকিল ফোন দেন দেখা করার জন্য। আমাদের দিনের পর দিন মাসের পর মাস কোর্টের বারান্দায় লেফট-রাইট করতে হয়েছে। যত ধরনের অপমান আমাদের করেছে। আমরা খুন বা মারামারি করি নাই যে আমাদের নামে মামলা হবে, কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। শেখ হাসিনার জজ-ম্যাজিস্ট্রেটরা মিথ্যা মামলা জেনেও আমাদের বিভিন্নভাবে অত্যাচার-অপমান করেছে।’