শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাসপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চার দশক ধরে চলছে লড়াই। দুই পক্ষের এ লড়াইকে ঘিরে হাতবোমা বানানোর উৎসব চলে গ্রামে। সবশেষ দুই যুগে বোমার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন আটজন। আহতের সংখ্যা দুই হাজারের অধিক। মামলা হয়েছে ৭০টির বেশি।
সম্প্রতি দুই পক্ষের লড়াইয়ে বোমার আঘাতে প্রাণ হারায় সৈকত নামে এক স্কুল ছাত্র। এতে আহত হন অন্তত ১০ জন। ঘটনাটি ঘটে বিলাসপুরের দূর্বাডাঙ্গা এলাকায়। এ ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয় প্রায় এক হাজার মানুষকে। ফলে গ্রামটি প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। চুরি ও ডাকাতিসহ নানা দুর্ঘটনার শঙ্কায় দিন কাটছে নারী ও শিশুদের। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রকৃত দোষীদের বিচার ও নির্দোষদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চলা এ লড়াইয়ের একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বোমা জলিল এবং অন্য পক্ষ বোমা কুদ্দুসের নিয়ন্ত্রণে। তাদের নির্দেশমতেই গ্রামের বনজঙ্গল, নৌকা, মাঠে-ময়দানে ও বাড়ির আঙিনায় চলে বোমা বানানোর কাজ। তাদের নির্দেশ কেউ না মানলে তাকে পড়তে হয় হুমকির মুখে। জড়ানো হয় মিথ্যা মামলায়। গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতেই হাতবোমা বানানো হয়। বোমা বানানোর বেশির ভাগ সরঞ্জাম আসে চাঁদপুর ও ঢাকা থেকে। স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সব সময় লড়াইয়ের আতঙ্ক বিরাজ করে গ্রামে। লড়াই শুরু হলেই ঘটে প্রাণহানি, অঙ্গহানি, লুটপাট ও মামলার ঘটনা। গ্রামের অনেক মানুষ এসব লড়াইয়ের কারণে পঙ্গু হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। জেলা পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিলাসপুরে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চুরি-ডাকাতি ঠেকাতে টহলে রয়েছে পুলিশ।