ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার আটঘড়িয়া গ্রামে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন। সংঘর্ষকারীরা ২৬টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে এবং নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। সংঘর্ষের পর ঐদিনই হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করেন।
এদিকে শনিবার (১২ এপ্রিল) রাত ৮টায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে উভয় পক্ষে তীর-ধনুক ও হাত বোমা নিয়ে চলছে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। সাধারণ মানুষ ছুটছে নিরাপদ স্থানের দিকে। ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়নের চেষ্টা করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আটঘড়িয়া গ্রামের ১ একর ১ বিঘা জমি ও বসতভিটাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে দুটি স্থানীয় গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। ইয়াসিন (৪৫) গ্রুপের সাথে মাহতাব (৩৫) গ্রুপের এই বিরোধ গেল শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে চরম আকার ধারণ করে।
এতে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। লোহার রড, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। একে অন্যের বাড়িতে চালানো হয় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট। এছাড়াও সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারী পুরুষসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
সংঘর্ষে গুরুতর আহতরা হলেন নুর ইসলাম (৫০), মুজিবর এবং মোহাম্মাদ আলী। তাদের সকলের বাড়ি আটঘড়িয়া গ্রামে। হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদেরকে ভর্তি করা হলে সেখানকার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ঠাকুরগাঁও আধুনিক জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের ২৬টি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে, এতে ৪০টি ঘর পুড়ে যায় ।
গেদুরা ইউনিয়নের আটঘড়িয়া গ্রামের ভুক্তভোগী মোজাফফর হোসেন জানান, হামলাকারীরা তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং তার স্ত্রীর গলায় ছুরি ধরে ট্রাঙ্কের ভেতর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
খবর পেয়ে হরিপুর ও রাণীশংকৈল ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে হরিপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকারিয়া মন্ডল বলেন, শুক্রবারে সংঘর্ষের পরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। শনিবার রাত ৮টায় আবারো উভয় পক্ষে তীর-ধনুক ও অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান করছেন। বর্তমান পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এতে হরিপুর, রাণীশংকৈল ও বালিয়াডাঙ্গী থানার পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়ন করা হয়েছে।
এদিকে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান বলেন, দুপক্ষের মধ্যে আবারো উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ