আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি আবারও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ব্যাপারে জোর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি হুমকি দিয়েছেন, যদি আফগানিস্তান এই ঘাঁটি ফিরিয়ে না দেয়, তবে তাদের জন্য খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। তবে ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির পরও কাবুলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বাগরাম ঘাঁটির এক ইঞ্চি জমিও যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হবে না।
ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'ট্রুথ সোশাল'-এ বলেন, যারা বাগরাম ঘাঁটি নির্মাণ করেছে, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যদি ঘাঁটিটি ফিরিয়ে না দেওয়া হয়, তাহলে খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। যদিও তিনি এই 'খারাপ কিছু' বলতে কী বুঝিয়েছেন, তা খোলাসা করেননি। এর আগে বৃহস্পতিবার লন্ডনে তিনি বলেছিলেন, চীনকে মোকাবিলা করার জন্যই এই ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন। তার দাবি, চীনের পারমাণবিক অস্ত্রাগার থেকে বাগরাম মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত।
সিএনএন-এর সূত্র অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন অন্তত এক মাস ধরে বাগরাম ঘাঁটি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে। তাদের মতে, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে ঘাঁটিটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য জরুরি। এর মধ্যে প্রধান কারণ হলো ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চীনের ওপর নজরদারি চালানো। এছাড়া, আফগানিস্তানের বিরল খনিজ সম্পদ উত্তোলন, ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করাও তাদের লক্ষ্য। তবে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি প্রয়োজন, যা ২০২০ সালে তালেবানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তির পরিপন্থী।
ট্রাম্পের হুমকির জবাবে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিফ অব স্টাফ ফাসিহউদ্দিন ফিতরাত বলেছেন, আফগানিস্তানের এক ইঞ্চি মাটি নিয়েও কোনো চুক্তি সম্ভব নয়। আমাদের এর কোনো প্রয়োজন নেই। এর মাধ্যমে তালেবান সরকার বাগরাম ঘাঁটি হস্তান্তরের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান চালায় মার্কিন বাহিনী এবং বাগরাম ঘাঁটি তাদের প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে। দীর্ঘ দুই দশক এটি যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ২০২১ সালে তালেবানের কাছে পরাজিত হয়ে মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করে। এরপর থেকে ঘাঁটিটি তালেবান সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল