ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে পতিত স্বৈরাচার সরকারের সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলামের নামে বান্দরবানে থাকা ৯২৩ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে ১২টি ব্যাংক হিসাব ও ১৪টি শেয়ারে থাকা চার কোটি ৬১ লাখ ৭৭ হাজার ২১৫ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত। এছাড়া, রাজধানীর গুলশানে জমিসহ একটি ফ্ল্যাট ও চট্টগ্রামের হালিশহরে চারতলা বাসার তিন ভাগের এক ভাগ অংশ জব্দের আদেশ হয়েছে।
এ দিন এ আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক আবু মোহাম্মদ আনোয়ারুল মাসুদ।
আবেদনে বলা হয়েছে, ফৌজিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ ছয় কোটি ৯০ লাখ দুই হাজার চার টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ রয়েছে। তার স্বামী মো. তাজুল ইসলামের অসদুপায়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে স্ত্রীর নামে ছয় কোটি ৯০ লাখ দুই হাজার চার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহায়তা প্রদান। একইসঙ্গে তার ১১টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনক ১৩ কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার ২০৩ টাকা জমা ও ১৩ কোটি ১৮ লাখ ৪৪ হাজার ৯৭৫ টাকা উত্তোলনসহ সর্বমোট ২৭ কোটি ১১ লাখ ৯৫ হাজার ১৭৮ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরপূর্বক আয়ের উৎস আড়াল করেন।
এতে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ পেনাল কোডের ১০৯ ধারায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা তদন্তকালে তার নামে ব্যাংক হিসাবগুলোতে গচ্ছিত অর্থের তথ্য পাওয়া যায়। যা তিনি যেকোনো সময় হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করছেন মর্মে জানা যায়। এজন্য মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করা একান্ত আবশ্যক।
এর আগে, ১৩ এপ্রিল মো. তাজুল ইসলামের নামে তিন জেলায় থাকা ২৮ বিঘা জমি, দুটি বাণিজ্যিক স্পেস, একটি ফ্ল্যাট ও একটি দোকান জব্দের আদেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে তার নিজ ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ৩৪টি ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত ২০ কোটি ৫৬ লাখ এক হাজার ২৩৭ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১৬টি কোম্পানিতে থাকা পাঁচ কোটি ২৩ লাখ ১১ হাজার ২৩০ টাকা মূল্যের শেয়ার ও দুই কোটি ৬০ লাখ ৪৫ হাজার ৮৪১ টাকা মূল্যের তিনটি গাড়ি অবরুদ্ধের আদেশ দেন।
বিডি প্রতিদিন/কেএ