ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতাল, পঙ্গু, ক্যানসার ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল এলাকায় বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করে ডাক্তারবাড়ি ফাউন্ডেশন। অসহায় রোগী ও তাদের স্বজনদের জন্য এই খাবার হয়ে ওঠে আশীর্বাদস্বরূপ। তবে এই বিনামূল্যে খাবারপ্রাপ্তিতেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে হাসপাতালের ক্যান্টিন ও আশপাশের হোটেল মালিক এবং দালালরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ডাক্তারবাড়ি ফাউন্ডেশন প্রতিদিন প্রায় ১৫০০ থেকে ২০০০ জনের এক বেলা খাবার বিতরণ করে। রোগীদের দেওয়া হয় ডিম, সবজি, মাছসহ পুষ্টিকর খাবার। সপ্তাহে একদিন তেহারিও দেওয়া হয়। এতে হাসপাতালের ক্যান্টিন, হাসপাতাল এলাকার হোটেলে বিক্রি কমে যাওয়ায় ফাউন্ডেশনটিকে রোষানলে পড়তে হয়। প্রতিনিয়ত খাবার বিতরণে বাধা দেয় হোটেল, ক্যান্টিনের মালিক ও দালালচক্র। জাতীয় বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালে বাবার চিকিৎসা করাতে আসা দিনাজপুরের আবদুল হালিম বলেন, ডাক্তারবাড়ি ফাউন্ডেশনের ট্রাক থেকে প্রতিদিন রাতে খাবার সংগ্রহ করি। খাবার খরচটা বেঁচে যাওয়ায় সে টাকা দিয়ে ওষুধ কিনি। হাসপাতালের ক্যান্টিন বা আশপাশের হোটেলের খাবারের মান খুবই খারাপ।
আমাদের মতো মানুষের জন্য ডাক্তারবাড়ি ফাউন্ডেশনের খাবার আশীর্বাদ। যেদিন ট্রাক আসে না সেদিন কলা-রুটি খেয়েই রাত পার করতে হয়।
ক্যানসার হাসপাতালের সামনে ফাউন্ডেশনের খাবার নিতে আসা আকলিমা বেগম বলেন, আমার স্বামী হাসপাতালে ভর্তি। হাসপাতাল এলাকায় আলুভর্তা দিয়ে খেতেও অনেক খরচ হয়। আমরা গরিব মানুষ। চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড় করাই কঠিন। খাবারের এত টাকা খরচ করা সম্ভব নয়। এর মধ্যে বিনামূল্যে খাবার পাওয়া সৌভাগ্য।
ডাক্তারবাড়ি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ লালন আহমেদ বলেন, ২০১২ সাল থেকে ‘১ টাকায় সেবা’ নামে একটি উদ্যোগ নিয়ে আমাদের যাত্রা। এখন আমরা প্রতিদিন ২ হাজার মানুষের খাবার বিতরণ করি। খাবারের পুরো খরচ আমাদের প্রতিষ্ঠানই বহন করে। এর মধ্যে দুজন প্রবাসীও যুক্ত রয়েছেন। সম্প্রতি হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াই আমরা পর্যাপ্ত খাবার বিতরণ করতে পারি না। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে বিনামূল্যে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো সহজ হয়।