রংপুর বিভাগে সাংবাদিকদের ওপর হামলা-নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে। গত দুই মাসে কমপক্ষে ১৫ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে হামলার শিকার হয়েছেন। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে সাংবাদিকরা দায়িত্ব পালন করছেন ভীতির মধ্যে। সর্বশেষ পুলিশের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছেন রংপুরের বদরগঞ্জের আমার দেশ পত্রিকার সাংবাদিক।
জানা গেছে, গত বুধবার বিকালে আমার দেশ পত্রিকার সাংবাদিক এম এ সালাম বিশ্বাস বদরগঞ্জ থানার মূলফটক থেকে ১০০ গজ দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় থানার ভিতর থেকে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান তার সামনে এসে থামে। পিকআপ ভ্যানের ভিতরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এ দৃশ্য তিনি মুঠোফোনে ভিডিও করছিলেন। তখন কনস্টেবল আল আমিন তাকে ভিডিও করতে নিষেধ করেন। এসময় মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ার পর পুলিশের ওই সদস্যসহ পিকআপ ভ্যান থেকে নেমে এসে আরও তিনজন পুলিশ সদস্য তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে কিলঘুষি মারেন।
এরপর ওই পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে তাকে চেংদোলা করে ধরে থানার ভিতরে নিয়ে যান। সেখানে তাকে বেধড়ক পেটানো হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান দৈনিক আমার দেশের প্রতিনিধি এম এ সালাম বিশ্বাসকে মারধরের ঘটনায় রংপুরের বদরগঞ্জ থানার এএসআই রবিউল আলম, কনস্টেবল আলামিন হোসেন ও মজিবুর রহমানকে ক্লোজড করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওসি আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগসহ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ১৯ মার্চ রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আইনজীবী সহকারী পরিচয়দানকারী এবং তাদের সহযোগীদের হামলায় ছয় সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এ সময় দুটি টিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম রিপন, ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক রাশেদ বাপ্পি, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক জহির রায়হান জুয়েল, একুশে টিভির ক্যামেরাপারসন আলী হায়দার রনি, খবরের কাগজের রংপুর প্রতিনিধি সেলিম সরকার আহত হন। এ সময় দুটি ভিডিও ক্যামেরা ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় রংপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন আহাম্মেদের কাছে লিখিত অভিযোগ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরা।
এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাংবাদিক সালেকুজ্জামান সাালেকসহ সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের মুখোমুখি করার জোর দাবি জানিয়ে বলেন সাংবাদিকদের ওপর হামলা, নির্যাতন বন্ধ করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।