ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু হওয়ার আগে পাকিস্তানকে অবহিত করা হয়েছিল। তার এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, এই অবহিতকরণের মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তা ও সেনাবাহিনীর জীবন হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে।
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে রাহুল লিখেছেন, “হামলার আগে পাকিস্তানকে জানানো ছিল অপরাধ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে ভারত সরকার তা করেছে। কে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? এর ফলে বিমানবাহিনী কতটি বিমান হারিয়েছে?”
রাহুল গান্ধী জয়শঙ্করের একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করেন, যেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসবিরোধী অবকাঠামোতে’ হামলার আগে ইসলামাবাদকে একটি বার্তা পাঠানো হয়। সেই বার্তায় জানানো হয়, “আমরা সন্ত্রাসীদের ওপর হামলা চালাতে যাচ্ছি, পাক সেনাদের টার্গেট নয়। তারা যেন এতে জড়িত না হয়।” তবে জয়শঙ্কর বলেন, পাকিস্তান সেই সুযোগ গ্রহণ করেনি।
এদিকে ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) দাবি করেছে, জয়শঙ্কর আসলে এমন কোনো বক্তব্য দেননি এবং তার কথাগুলো ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যদিও ভিডিওতে স্পষ্টভাবে দেখা যায়, জয়শঙ্কর পাকিস্তানকে আগেই অবহিত করার কথা বলছেন এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও তার বক্তব্য অস্বীকার করা হয়নি।
বিরোধীদল আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। দলের রাজ্যসভার এমপি সঞ্জয় সিং বলেছেন, “যখন একজন মন্ত্রী প্রকাশ্যে স্বীকার করেন যে হামলার আগে পাকিস্তানকে সতর্ক করা হয়েছিল, তখন তা দেশদ্রোহিতার শামিল। এটি ক্ষমার অযোগ্য।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এ বিষয়ে জবাব দিতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য কতটা সত্য, আর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য কতটা সঠিক—তা দেশবাসীর জানা দরকার। পাকিস্তানকে আগে জানানোর সিদ্ধান্ত কি উচ্চপর্যায়ের নির্দেশ ছিল? সরকার কি সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে? মোদি সরকারকে এর জবাব দিতে হবে।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক