আগের দিন ম্যাচ থাকায় গতকাল মোহামেডানের ফুটবলারদের অনুশীলন ছিল না। তবে ফুটল নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন সুলেমান দিয়াবাতে, এমানুয়েল সানডে, মোজাফ্ফররা। তারা সবাই ক্লাবে বসে টি-স্পোর্টসে ইউটিউবে ঢাকা আবাহনী ও ফর্টিস এফসির ম্যাচ মনোযোগসহকারে দেখছিলেন। গুরুত্বটা আরও বেড়ে যায় আবাহনী পিছিয়ে যাওয়ায়। ফর্টিস জিতলে গতকালই শিরোপা নিশ্চিত হতো মোহামেডানের। বাকি তিন খেলা তখন আনুষ্ঠানিকতায় রূপ নিত। শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো। আবাহনী হেরে গেল ১-২ গোলে। ম্যাচ শেষের পর খেলোয়াড় ও সমর্থকদের সে কী উল্লাস। কতদিন পর এমন উৎসবের দেখা মিলল ক্লাবে। শিরোপা জেতার পেছনে খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব দিতেই হবে। তবে মূল কারিগর কে? ২০০৭-০৮ মৌসুমে পেশাদার লিগ শুরু হওয়ার পর মোহামেডানে অনেক দেশি ও বিদেশি কোচ দায়িত্বে ছিলেন। এত লম্বা তালিকা, তার পরও কোনো কোচ ঐতিহ্যবাহী দলটিকে লিগ ট্রফি জেতাতে পারেননি। রানার্সআপই ছিল প্রাপ্তি। শেষ পর্যন্ত ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেয়ে গেলেন আলফাজ আহমেদ। যিনি তারকার খ্যাতি পেয়েছেন সাদা-কালো জার্সিতে খেলেই। তাঁর নেতৃত্বে মোহামেডান ১৯৯৯ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০০৫ সালে তাঁর নেতৃত্বে মোহামেডান জাতীয় লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়। মোহামেডানে খেলা অবস্থায় তিনি একবার এএফসি মাসসেরা ফুটবলারও হন।
সেই আলফাজের প্রশিক্ষণে ঐতিহ্যবাহী দলের বন্ধ দুয়ার খুলল। অন্যরা না পারলেও আলফাজই উপহার দিলেন পেশাদার লিগের স্বপ্নের প্রথম শিরোপা। ইতিহাসের পাতায় নতুন করে নাম লেখা হলো আলফাজের। এর আগে ২০২২-২৩ মৌসুমে তাঁর প্রশিক্ষণে ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হন সাদা-কালোরা। অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে আলফাজই প্রথম মোহামেডানকে লিগ জেতালেন। এমন বিরল রেকর্ড গড়ার পর আলফাজের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কেমন লাগছে? বললেন, ‘অনুভূতি বুঝিয়ে বলতে পারব না। বলতে পারেন কোচিং ক্যারিয়ারে এটাই আমার সেরা অর্জন।’
আলফাজ আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি। ফুটবল চিফ আলমগীর ভাই আমাদের সব রকম সহযোগিতা করেছেন। নকিব, কানন ভাই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। খেলোয়াড়রা এবার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল দলকে শিরোপা উপহার দেবে। দেশি ও বিদেশি খেলোয়াড়দের চমৎকার সমন্বয়ে আমরা এমন কঠিন পথ পাড়ি দিতে পেরেছি। মোহামেডানকে নিয়ে অনেক কিছু বলা হয়েছে। এর জবাব দিয়েছি সেরা হয়ে।’