ভ্যাটের আওতা বাড়ানোর জন্য মাঠ পর্যায়ের ভ্যাট কমিশনারদের কাজে লাগিয়ে সুফল পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। যার ফলে গত ফেব্রুয়ারিতে ভ্যাট নিবন্ধনে রেকর্ড করেছে এনবিআর। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আইভাস সার্ভার চালুর পর এক মাসে রেকর্ড ১৮ হাজার ৩১০টি নতুন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হয়েছে। কোনো মাসে এর আগে এ পরিমাণ নিবন্ধন রেকর্ড হয়নি। যেটি এনবিআরের সর্বকালের রেকর্ড। গত অর্থবছরে ভ্যাট নিবন্ধন হয়েছে ৬৮ হাজার ২৩টি। আর এ বছরে ৭ মাসে ৬০ হাজার ৫৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হয়েছে। ফলে এ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ভ্যাট আদায়ের আশা করছে এনবিআর।
জানা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসকে কমিশনারদের জন্য নিবন্ধনের মাস হিসেবে ঘোষণা দেয় এনবিআর। কমিশনারদের তৎপড়তায় ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রাম কমিশনারেটে ৩৭২৬ জন, ঢাকা (দক্ষিণ) কমিশনারেটে ২৫৩৫, ঢাকা (পশ্চিম) কমিশনারেটে ২৪৩১, খুলনা কমিশনারেটে ২১১৪, ঢাকা (উত্তর) কমিশনারেটে ১৮৫৬, যশোর কমিশনারেটে ১৪৭০, রাজশাহী কমিশনারেটে ৮৩০, ঢাকা (পূর্ব) কমিশনারেটে ৮৩৬, কুমিল্লা কমিশনারেটে ১০৭১, রংপুর কমিশনারেটে ১২২৪, সিলেট কমিশনারেটে ২১৭ জনসহ মোট ১৮ হাজার ৩১০ জন ব্যবসায়ী নতুন নিবন্ধন গ্রহণ করেছেন।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ফেব্রুয়ারিতে এনবিআরের এক মিটিংয়ে সব কমিশনার, এআরও, আরওদের প্রান্তিক পর্যায়ে সশরীরে গিয়ে করদাতা শনাক্তকরণের এবং জুয়েলারি দোকান, রেস্তোরাঁ, হোটেল, শপিং মলের দোকান ও বড় ব্যবসার দোকান ইত্যাদির নিবন্ধনের আওতায় আনতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ির মাধ্যমে পরিবাহিত ভ্যাটযোগ্য তামাক বা অন্য পণ্য পেলে ফ্যাক্টরি খুঁজে বের করা, ?ব্যক্তির ব্যবসায় আয়কর পরিশোধিত হলে তাকে ভ্যাট নেটে নিয়ে আসা, ?ব্যবসায়ী ও টিআইএনধারীদের ভ্যাট নিবন্ধন প্রদান, ?শূন্য রিটার্ন পরীক্ষা করে অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়।
আইভাস সার্ভারের তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে ৭ মাসে ৬০ হাজার ৫৫টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হয়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সারা দেশে ৪ হাজার ৫২০টি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হয়েছিল। ১ বছরের ব্যবধানে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এ সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার বেড়েছে। ভ্যাটের নিবন্ধনের আওতা বাড়ানোর জন্য বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে বিদ্যমান ভ্যাট আইনে সংশোধন করে। এ আইনে কোনো ব্যবসার বাৎসরিক টার্নওভার ৫০ লাখ টাকার অধিক হলেই তাকে ভ্যাট নিবন্ধন হতে হবে।
রাজস্ব আদায় ও করের আওতা বাড়াতে নতুন নীতি ও দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নে গত আগস্ট থেকে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। কর জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। ভ্যাটের রাজস্ব বাড়ানোর জন্যে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে থেকে ১২টি ভ্যাট কমিশনারেটের দৈনন্দিন কর্মকান্ডের মনিটরিং জোরদার করা হয়। ফলে নিবন্ধন সংখ্যা ও রাজস্ব আদায় আনুক্রমিক হারে বাড়ে। যার ফলে ভ্যাটের নতুন রেকর্ড হয়।