আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) ট্রাস্ট পরিচালিত ‘আইআইইউসি টাওয়ার’র আয় থেকে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ উপসহকারী পরিচালক কমল চক্রবর্তী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- আইআইইউসির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ, আইআইইউসি টাওয়ার সমন্বয়ক ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য অধ্যাপক কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য অধ্যাপক সালেহ জহুর, ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমেদ চৌধুরী, রিজিয়া রেজা চৌধুরী, অধ্যাপক ফসিউল আলম, অধ্যাপক আব্দুর রহিম, ড. শামসুজ্জামান, বদিউল আলম, সাবেক দুই রেজিস্ট্রার অধ্যাপক হুমায়ুন কবির ও শফিউর রহমান, টাওয়ার ম্যানেজমেন্ট সদস্য অধ্যাপক ড. মাহি উদ্দিন, আফজল আহমেদ ও মোজাফফর হোসাইন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত আসামিরা ট্রাস্টের ১২ কোটি ৭৯ লাখ ৪১ হাজার ৫৫৬ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ অর্থ শিক্ষাবৃত্তি, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তা ও সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহারের কথা থাকলেও, তা ব্যয় করা হয় ব্যক্তিগত ভাতা, সম্মানী, উৎসব বোনাস ও বিদেশ ভ্রমণের খরচ হিসেবে।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, নদভী প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকার বেশি সম্মানী, পাশাপাশি জ্বালানি ও মোবাইল বিল নিতেন। তাঁর স্ত্রী রিজিয়া সুলতানাও ট্রাস্টের অর্থ থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ৩০ লাখ টাকা ভাতা ও চিকিৎসা খরচ বাবদ পেয়েছেন। ট্রাস্টের অন্যান্য সদস্যরাও অতিরিক্ত বোনাস, ভাতা ও আনলিমিটেড জ্বালানি সুবিধা ভোগ করেছেন— যা ট্রাস্টের নীতিমালা ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনবিরোধী।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, টাওয়ারের আয়-ব্যয়ের অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল হিসাবের বাইরে আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখা হতো। সেখান থেকে সৌদি আরবে পাঠানো হয় প্রায় চার লাখ মার্কিন ডলার, যা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন লঙ্ঘন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, পর্যাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতেই মামলাটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তদন্তে যদি অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল