‘স্পেশাল অ্যাপেয়ারেন্স’ চলচ্চিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। জনপ্রিয় কোনো তারকাকে এক ঝলকের জন্য বিশেষ একটি চরিত্রে উপস্থাপন করা হয়। একে অতিথি চরিত্রও বলা হয়। অতিথি শিল্পী হয়ে জনপ্রিয় শিল্পীরা পর্দায় হাজির হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দর্শক খুশিতে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। ঢাকাই ছবিতে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করা কয়েকজন সিনিয়র শিল্পীর কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ
রাজ্জাক
ঢাকাই ছবির কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাকই প্রথম এদেশের চলচ্চিত্রে অতিথি শিল্পী হন। প্রথম তিনি ছবিতে অতিথি হন ১৯৭৩ সালে মুক্তি পাওয়া আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘অতিথি’ ছবিতে। এরপর এ নির্মাতার ‘অগ্নিশিখা’ ছবিতেও অতিথি হন রাজ্জাক। ১৯৭৪ সালে মাসুদ পারভেজ পরিচালিত ‘মাসুদরানা’ ছবিতে একটি গানে এ জনপ্রিয় শিল্পীকে দেখা যায়। একটি বারে তিনি ‘মনেরে রঙে রাঙাবো’ গানটি নিয়ে উপস্থিত হন। এর আগে ১৯৬৬ সালে বশীর হোসেন পরিচালিত ‘১৩ নাম্বার ফেকু ওস্তাগার লেন’ ও মুস্তাফিজ নির্মিত ‘ডাকবাবু’ সুরুর বারা বাংকভির ‘আখেরি স্টেশন’ ছবিতে অতিথি হিসেবে দেখা যায় নায়করাজকে। এ ছাড়া রাজ্জাক অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন বুলবুল আহমেদের ‘রাজলক্ষ্মী-শ্রীকান্ত’, নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূলের ‘এক কাপ চা’ ও বাপ্পারাজের ‘কার্তুজ’ এবং আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘জমিদার বাড়ির মেয়ে’ ছবিতে।
রহমান
ষাটের দশকের জনপ্রিয় নায়ক রহমান আশির দশকে হাফিজউদ্দিন নির্মিত ‘অবদান’ ছবিতে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জসিম, শাবানা ও জাফর ইকবাল।
শবনম
ষাটের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম নব্বইয়ের দশকে আজিজুর রহমান পরিচালিত শাবনাজ-নাঈম অভিনীত ‘দিল’ ছবিতে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন।
ববিতা
‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী’ ছবিতে অতিথি শিল্পীর ভূমিকায় অভিনয় করেন ববিতা।
সোহেল রানা
প্রখ্যাত অভিনেতা মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা রেদওয়ান রনির ‘চোরাবালি’, সাফিউদ্দিন সাফির ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী’তে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন।
ইলিয়াস কাঞ্চন
‘কে আপন কে পর’ ও ‘স্বর্গ থেকে নরক’ ছবিতে অতিথি হন জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন।
শাকিব খান
ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান শাহীন-সুমনের ‘কে আপন কে পর’, নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূলের ‘এক কাপ চা’, জাকির হোসেন রাজুর ‘দবির সাহেবের সংসার’ ও সর্বশেষ সাইফুল ইসলাম মান্নুর ‘পুত্র’ ছবিতে অতিথি হয়েছেন।
জুয়েল আইচ
এদেশের জনপ্রিয় জাদুশিল্পী জুয়েল আইচকে অতিথি চরিত্রে কাস্ট করে ছবি নির্মাণ করেন প্রখ্যাত নির্মাতা আজিজুর রহমান। ১৯৮০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ নির্মাতার বিপুল জনপ্রিয় ‘ছুটির ঘণ্টা’ ছবিতে জুয়েল আইচকে ছবির শিশুশিল্পী মাস্টার সুমনের সঙ্গে ‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী’ গানে জাদুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করতে দেখা গেছে। এ ছবিতে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন জুয়েল আইচ।
খসরু
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি ‘ওরা ১১ জন’ ছবির নায়ক খসরুকে আশির দশকে জহিরুল হকের ‘বিজয়’ ছবিতে বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা মানে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়।
জসিম
সত্তরের দশকে ‘রংবাজ’ ছবিতে খলনায়ক হয়ে আসা অভিনেতা জসিম পরে নায়ক হিসেবেও ব্যাপক জনপ্রিয় হন। এ জনপ্রিয় অভিনেতা আশির দশকে নির্মিত আমজাদ হোসেনের ‘সুন্দরী’ ছবিতে ববিতার বাবার ভূমিকায় অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন।
আফজাল হোসেন
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা আফজাল হোসেন বড়পর্দায় অভিনয় করেও সমান দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেন। পরে নব্বইয়ের দশকে শহিদুল ইসলাম খোকনের ‘পালাবি কোথায়’ এবং চলতি বছর মুক্তি পাওয়া ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ও তাণ্ডব ছবিতে তাঁকে অতিথি চরিত্রে দেখা যায়।
নূতন
সত্তরের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নূতন এ জে মিন্টুর ‘পিতা মাতা সন্তান’ ছবিতে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন।
মৌসুমী
ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী এস এ হক অলিকের ‘হৃদয়ের কথা’ ও অশোক পাতির ‘আশিকী’ ছবিতে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
রিয়াজ
দর্শকপ্রিয় অভিনেতা রিয়াজ অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘দুই নয়নের আলো’ ছবিতে।
ফেরদৌস
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা ফেরদৌস অতিথি হয়েছেন মুশফিকুর রহমান গুলজারের ‘মন জানে না মনের ঠিকানা’ ও নাসির উদ্দীন ইউসুফের ‘গেরিলা’ ছবিতে।
নিপুণ
নায়িকা নিপুণ ‘পদ্ম পাতার জল’, ‘এই তো প্রেম’ ছবিতে অতিথি হয়েছেন।
আরিফিন শুভ
অমিতাভ রেজার ‘আয়নাবাজি’ ছবিতে পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অতিথি চরিত্রে দেখা গেছে এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা আরিফিন শুভকে।
ইমন
মোস্তফা কামাল রাজের ‘সম্রাট’ ছবিতে অতিথি হিসেবে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেন নায়ক ইমন।