জকসু নির্বাচনে একটি গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমাদের প্রত্যাশা ছিল প্রশাসন একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবে কিন্তু সবাইকে হতাশ করেছে তারা।
বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে 'সম্পাদকীয় পদ সংযোজন ও জকসু'র সার্বিক পর্যালোচনায়' শীর্ষক এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল এসব কথা বলেন।
জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক বলেন, আমরা সংবিধি গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছি। কিছু ধারা শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক হলেও কিছু জায়গায় আরও স্পষ্ট ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে। আমরা প্রস্তাব করেছি- জকসুর মেয়াদ ও দায়িত্ব বাস্তবসম্মত করা, সদস্য পদে অংশগ্রহণ সহজ করা এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক কাজের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া। পাশাপাশি উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষমতা শুধু সহ-সভাপতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সাধারণ সম্পাদককেও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি মানে সহনশীলতা ও ভিন্ন মতের প্রতি শ্রদ্ধা। সব সংগঠন যেন স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারে এবং প্রশাসন যেন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন আয়োজন করে, সেটাই আমরা চাই। আমরা বিশ্বাস করি, জকসু নির্বাচন হবে একটি গণতান্ত্রিক উৎসব, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রকৃত নেতৃত্ব গড়ে তোলার সুযোগ পাবে। নির্বাচনের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রগতিশীল জকসু গড়ে উঠবে। জকসু হোক শিক্ষার্থীদের আশা, নেতৃত্ব ও গণতন্ত্র চর্চার কেন্দ্রবিন্দু।
সংবাদ সম্মেলনে জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, বিগত সময়ে দেশের অনেক ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে সেটি সবারই জানা। আমরা চাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন এমনটা না ঘটে। সবাই যেন সমান সুযোগ পায়, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
তিনি আরও বলেন, আমরা এমফিল ও পিএইচডির শিক্ষার্থীদের রাখার দাবি জানিয়েছিলাম। সেটা রাখা হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাবল এমফিল সুযোগ পেলেও জকসুতে সে সুযোগ নেই। এছাড়া বিগত ফ্যাসিস্টদের বিচার করা হয়নি। এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতা।
এসময় জবি ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জকসু তে নতুন করে ১০টি পদ সংযোজন করতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
পদগুলো হলো- বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী বিষয়ক সম্পাদক; ছাত্রীকল্যাণ বিয়ষক সম্পাদক (শুধু নারীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে); দক্ষতা উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক (ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক সম্পাদক); ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক; মিডিয়া ও যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক; দপ্তর সম্পাদক; বিতর্ক সম্পাদক এবং আলাদাভাবে দুটি সম্পাদক করতে হবে; স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক থেকে (ক) স্বাস্থ্য সম্পাদক, (খ) পরিবেশ সম্পাদক আলাদাভাবে করতে হবে; সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক থেকে করে দুটি সম্পাদক (ক) সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, (খ) সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক; কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক।
এছাড়া তিনটি সদস্য পদ সংযোজন করে বর্তমান সংবিধিতে উল্লেখিত সাতটিটি সদস্য পদের সাথে আরও নতুন ০৩টি সদস্য পদ যুক্ত করে মোট ১০টি সদস্য সংযুক্ত করতে দাবি জানিয়েছেন তারা।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জবি ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত