পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর স্বাস্থ্য ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিতেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব। নারীর প্রতি যত্নশীল হওয়া যেমন সামাজিক দায়িত্ব, তেমনি জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত। নারীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না করে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পূর্ণ হয় না।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত ‘জয়েনিং হ্যান্ডস ফর ইম্প্রুভিং উইমেনস হেলথকেয়ার ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় নারীরা লবণাক্ততা, বিশুদ্ধ পানির অভাব ও প্রজননজনিত নানা জটিলতার মুখোমুখি হন। এসব অঞ্চলে নারীদের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে উদ্ভাবনী উদ্যোগ যেমন, মোবাইল ক্লিনিক বা নৌকা হাসপাতাল চালু করা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প বা উপকূলের প্রত্যন্ত এলাকায় যারা স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন, তারা আসলে মানবিকতার ফ্রন্টলাইনে কাজ করছেন।
নারীর প্রজনন স্বাস্থ্যকে সামাজিকভাবে ‘নিষিদ্ধ’ ভাবা ভুল বলে মন্তব্য করে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, শিশুদের ছোটবেলা থেকেই স্বাস্থ্যবিধি, প্রজনন স্বাস্থ্য ও আত্মসচেতনতা সম্পর্কে শেখানো দরকার। নারীর স্বাস্থ্য নিয়ে নীরবতা নয়, সচেতন আলোচনা দরকার।
নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনো প্রজনন স্বাস্থ্য বা মাতৃত্বকালীন যত্ন অনেকের জন্য বিলাসিতা। নারীকে সুস্থ রাখতে হলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র—সবাইকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের সমাজে নেগেটিভিটি ছড়ানো এখন একধরনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অথচ উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন বিশ্বাস, প্রত্যাশা ও ইতিবাচক চিন্তা। নারী স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেই ইতিবাচকতার শক্ত ভিত গড়ে দিতে পারে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. মো. আবু জাফর, এনডিসি মহাপরিচালক ডা. আশরাফি আহমাদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর এবং মেরি স্টোপস ক্লিনিকের প্রতিনিধি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়া প্রফেসর ডা. ফারহানা দেওয়ানের ‘ফিগো উইমেনস অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অর্জন উপলক্ষে তাকে বিশেষভাবে সম্মাননা জানানো হয়।
বিডি প্রতিদিন/কেএইচটি