২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষি গুচ্ছভুক্ত ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৩টায় শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে ১ ঘণ্টা।
দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান কেন্দ্র পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)-তে এবার অংশ নিচ্ছেন ৪ হাজার পরীক্ষার্থী। ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক নিরাপত্তা সভায় কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, পরীক্ষার দিন দুপুর ১২টার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। পাশাপাশি শুক্রবার রাত থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। চার স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী নিশ্চিত করতে আনসার, পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে কাজ চলবে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এসএম হেমায়েত জাহান, সভাপতিত্ব করেন প্রক্টর প্রফেসর আবুল বাশার খান। বক্তব্য রাখেন ভাষা ও যোগাযোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুলতানা জাহান।
সভায় জানানো হয়, পরীক্ষার দিন শিক্ষার্থীদের জন্য পাঁচটি হেল্প ডেস্ক, ওয়াশরুম সুবিধা, মেডিকেল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে।
নিরাপত্তার বিষয়ে ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, ভর্তি পরীক্ষা একটি বিশাল আয়োজন। প্রশাসনের একার পক্ষে এটি সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিএনসিসি, রোভার স্কাউটস ও বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল টিমসহ সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করছি।
একই দিনে ‘মার্চ টু গাজা’ কর্মসূচির কারণে যানজটের আশঙ্কা থাকায় পরীক্ষার্থীদের নির্ধারিত সময়ের কমপক্ষে এক ঘণ্টা বা যতদূর সম্ভব তার আগেই কেন্দ্রে পৌঁছাতে বলা হয়েছে। পরীক্ষার দিন বেলা ১১টায় পর্যায়ক্রমে ইউনিভার্সিটি স্কয়ার (লেবুখালী) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে (বাসে) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারবেন। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে সকাল ৮টার পর প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনমুখী সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। শুধু পরীক্ষাসংক্রান্ত যানবাহন এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি রোধে থাকছে কঠোর নজরদারি। প্রশ্নপত্র বিতরণে জিপিএস ট্র্যাকিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, যাতে নির্ধারিত হলে হলে প্রশ্ন পৌঁছানো নিশ্চিত করা যায়। পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগে পরীক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ দেহ তল্লাশি করা হবে এবং কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস বহনের সুযোগ থাকবে না।
এবার কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আসন সংখ্যা ৩ হাজার ৮৬৩ (পবিপ্রবিতে ৪২৩ আসন)। আবেদন করেছেন ৯৪ হাজার ২০ জন শিক্ষার্থী, যার মধ্যে ছাত্র ৪৬ হাজার ৯৩২ জন এবং ছাত্রী ৪৭ হাজার ৮৮ জন। গড়ে প্রতিটি আসনের জন্য প্রতিযোগিতা করছেন ২৫ জন শিক্ষার্থী। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কৃষি গুচ্ছভুক্ত ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩টি উপকেন্দ্রে। সম্ভাব্য ফল প্রকাশের তারিখ ১৫ এপ্রিল।
উল্লেখ্য, কৃষি গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো—বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (ময়মনসিংহ), পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা), গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল