থমকে আছে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন। নেই কোনো ইভেন্টভিত্তিক খেলার আয়োজন, নেই সিজেকেএসের তৎপরতা। নেতৃত্ব শূন্যতা বিরাজ করছে জেলা ক্রীড়া সংস্থায়। গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে স্থির হয়ে পড়েছে খেলাধুলার আয়োজন। ফলে স্টেডিয়াম এলাকায় বিরাজ করছে এক সুনসান নীরবতা। সিজেকেএসের অ্যাডহক কমিটির সদস্যরা বলছে, একটি গোষ্ঠী তৎপরতা চালাচ্ছে কমিটি যেন কোনো কাজ করতে না পারে। সেই সিন্ডিকেটের কবলে অনেক খেলোয়াড় খেলা ছেড়েছেন। তারা আবারও সিজেকেএস লুটেপুটে খেতে এ কমিটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহসভাপতি সাবেক ফুটবলার হাফিজুর রহমান বলেন, সিজেকেএসের নির্বাচিত কমিটি ভেঙে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির উচিত ছিল খেলাধুলা সচল করা। ক্লাবগুলোকে ডেকে কীভাবে খেলাধুলা সচল করা যায়, সে বিষয়ে মতামত নেওয়া। কিন্তু দৃশ্যমানভাবে সেটা এই কমিটি করেনি। যার কারণে খেলাধুলা বন্ধ থাকার কারণে আগামী এই সংকট ক্রীড়াঙ্গনে প্রভাব পড়বে। খেলোয়াড়রা অন্য পেশায় ঝুঁকছে, ক্লাবগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এ পরিস্থিতি খেলাধুলা শুরু করতে হবে এবং সিজেকেএস নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। এখন অ্যাডহক কমিটি আছে, তাদের কিন্তু জবাবদিহিতা নেই, নির্বাচিত কমিটি এলে তাদের জবাবদিহিতা থাকবে। জবাবদিহিতা থাকলে বেশি না হলে কম হলেও খেলা চলবে। তাই চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এখন যে স্থবিরতা বিরাজ করছে ক্রীড়াঙ্গনে তা নিরসনে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোর দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য সাইদুল ইসলাম ইবেন মীর বলেন, সিজেকেএসের ইতোমধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ইভেন্টভিত্তিক উপকমিটি গঠন করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব উপকমিটি গঠন করার জন্য আমরা কাজ করছি, রমজানের কারণে কাজ কিছুটা ধীরে হয়েছে। তবে দ্রুত সময়ে উপকমিটি গঠন করে খেলাধুলা কীভাবে চালু করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে। তবে একটি অদৃশ্য শক্তি অ্যাডহক কমিটি যেন কোনো ধরনের কাজ করতে না পারে সেজন্য কাজ করছে।
জানা যায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর দেশের সব বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি ভেঙে অ্যাডহক কমিটি করার নির্দেশনা দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। সে অনুযায়ী গত ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা এবং ২৬ জানুয়ারি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটি ঘোষণার পর ক্রীড়া সংগঠকদের আশা ছিল, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সিজেকেএস সারা বছর ইভেন্টভিত্তিক যেসব খেলাধুলা পরিচালনা করে সেগুলো অ্যাডহক কমিটি করবে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে অ্যাডহক কমিটি গঠনের দুই মাসে মাত্র একটি সভা করেছে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি। তিন মাস মেয়াদি এ অ্যাডহক কমিটি এখনো ইভেন্টভিত্তিক কোনো উপকমিটি গঠন করতে পারেনি। তিন মাসের মধ্যে দুই মাস পার হলেও এখনো জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের প্রস্তুতি নেই বললেই চলে। অথচ সিজেকেএসের আয়োজনে বছরজুড়ে বিভিন্ন ইভেন্টভিত্তিক ৩০-৩৫টি খেলার আয়োজন করা হয় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। সেই এম এ আজিজ স্টেডিয়াম এখন খেলাধুলা থেকে অনেক দূরে। তাই ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড়দের প্রত্যাশা ইভেন্টভিত্তিক খেলাধুলা যেন দ্রুত সময়ে শুরু করা হয়।