এখন থেকে লালন উৎসব জাতীয়ভাবেই পালিত হবে উল্লেখ করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, লালন আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতির ধারক-বাহক। লালনকে দেখলে বাংলাদেশকে দেখা যায়। তাই লালন আমাদের চেতনায়, আমাদের হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।
শুক্রবার ফকির লালন শাহের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা, সংস্কৃতি অনুষ্ঠান ও লালন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্ব-শরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। তিনি বলেন, লালন সাঁই আমাদের দেশের অন্যতম বড় দার্শনিক ও ভাবুক। তার জীবনদর্শন ও আদর্শ আমাদের আত্মস্থ করা প্রয়োজন। এবারই প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে লালন তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান হচ্ছে, যা অত্যন্ত গৌরবের বিষয়।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এ উপলক্ষ্যে আগামী ১৮ অক্টোবর ঢাকায় লালন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। তিন দিনব্যাপী চলমান এই অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় তিনি আয়োজক, অংশগ্রহণকারী শিল্পী এবং সাধু-ভক্তদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান লেখক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাককে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমান ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন।
জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমি সভাপতি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন আন্তজার্তিক খ্যাতিমান লেখক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট চিন্তক ও গবেষক ফরহাদ মজহার। এছাড়া, বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আল মামুন।
আলোচনা সভা শেষে উদ্বোধনী দিনে প্রয়াত সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের স্মরণে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং গভীর রাত অবধি চলছে লালনসংগীতের আসর।
শনিবার সকালে বাল্যসেবা ও দুপুরে পূর্ণ সভার মধ্যদিয়ে এ সাধুসঙ্গ শেষ হবে। মায়ার টানে, আত্মার টানে সাধু-ভক্তরা ছুটে আসছেন ধামে।
১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক লালন সাঁই কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন। এরপর থেকে আখড়াবাড়ি চত্বরে তার ভক্ত-অনুসারীরা তাদের সাঁইজিকে স্মরণ করে আসছেন।
লালন একাডেমি প্রতিবছর ছেঁউড়িয়ায় একাডেমি চত্বরে লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করলেও এবারই প্রথম এই আয়োজন হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ