মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বাণিজ্যনীতিতে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। নতুন করে আরোপ করা শুল্কে বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘বাণিজ্যযুদ্ধ’ আরও তীব্র করেছেন বলে মনে করছেন অনেকে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্কে বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের নাম আছে। ট্রাম্পের নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষিত চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, তার ঘোষণার পর কোনো দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে তার ওপরও সমপরিমাণ বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হবে।
কোন দেশে কত শুল্ক : ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশের ওপর নতুন করে ৩৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর আগে গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। বাংলাদেশ ছাড়াও মিয়ানমার, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ মোট ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প প্রশাসন থেকে লাওসের ওপর ৪০, মিয়ানমারের ওপর ৪০, কম্বোডিয়া ৩৬, থাইল্যান্ড ৩৬, সার্বিয়া ৩৫, ইন্দোনেশিয়া ৩২, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ৩০, দক্ষিণ আফ্রিকা ৩০, তিউনিসিয়া ২৫, কাজাখস্তান ২৫, দক্ষিণ কোরিয়া ২৫, জাপান ২৫ ও মালয়েশিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে চলতি বছরের আগস্ট থেকে।
দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে অনিশ্চয়তা : ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কনীতি দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির জন্য বড় একটি ধাক্কা হতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলো, যারা শ্রমনির্ভর শিল্পে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে থাকে, তাদের জন্য এ সিদ্ধান্ত নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা শুল্কে দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। উচ্চ শুল্ক নিয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশসহ অন্যরা তাদের বাজার হারাবে। রপ্তানি আয়ের ওপরও এর প্রভাব পড়বে।
বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া : যুক্তরাষ্ট্রের এই একতরফা শুল্কনীতির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অনেক দেশই সমালোচনা করেছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম তার এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের কারণে তাদের বস্ত্র, আসবাব, রাবার ও প্লাস্টিক শিল্প ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এটা কোনোভাবেই বন্ধুত্বসুলভ আচরণ নয় বলে মনে করেন তিনি। এদিকে অস্ট্রেলিয়া এক প্রতিক্রিয়ায় জানায়, তাদের ওপর শুল্ক ‘শূন্য’ হওয়া উচিত।