ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ‘আমরা এখনো জাতীয় পার্টির স্বপদে বহাল রয়েছি। মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বহাল রয়েছেন। শামীম হায়দার পাটোয়ারীর নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ।’ তিনি বলেন, ‘সম্মেলন ঘোষণার পর পার্টির কোনো পদ পরিবর্তনের এখতিয়ার চেয়ারম্যানের নেই। চেয়ারম্যান মিটিং ডাকারও এখতিয়ার রাখেন না।’ গতকাল গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন তিনি। এক দিন আগে ৭ জুলাই তাঁকে এবং পার্টির মহাসচিবসহ তিন শীর্ষ নেতাকে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেন জি এম কাদের।
আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করেছি। আমরা বিবৃতি দিয়ে বলেছি ২০ (ক) ধারা বাতিল করতে বলেছি, হিসাবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং বৃহত্তর ঐক্যের কথা বলেছি। আমাদের এসব কাজ কোনোভাবেই দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী হিসেবে গণ্য হতে পারে না।’ তিনি বলেন, ‘বিগত নির্বাচনে আড়াই কোটি টাকার মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। সে টাকার কোনো হিসাব দেননি। পার্টির চাঁদা এবং অনুদানের কোনো হিসাব দেননি। আমরা তাঁর কাছে এসবের হিসাব চেয়েছি। এটা গঠনতন্ত্রবিরোধী হতে পারে না।’ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অবিলম্বে কাউন্সিলের মাধ্যমে পার্টির সব সমস্যা সমাধান করার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘জি এম কাদের মৃত্যুপথযাত্রী এইচ এম এরশাদের স্বাক্ষর জোর নিয়ে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়েছেন। ঠিক যেভাবে মিলিটারি ক্যু হয়।’ পার্টি ঐক্যবদ্ধ করা এবং কাউন্সিলের মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধানের দাবি জানান তিনি।
জাতীয় পার্টি ছোট হতে হতে এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে বলে মন্তব্য করেছেন কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে জাতীয় পার্টি আগামী দিনে অনেক ভালো করতে পারবে। জি এম কাদের একে একে সবাইকে বের করে দিয়েছেন। আমরা সবাই চাই একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, এ টি ইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রতনা, নাজমা আক্তার, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. আরিফুর রহমান খান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে সদ্যবহিষ্কৃত মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘এমন কী অপরাধ করলাম যার জন্য পার্টির প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি দিলেন?’ চুন্নু বলেন, ‘একটাই দুঃখ-১৯৮৬ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই। ’৮৭ সালে উপমন্ত্রী হয়েছি, তখন থেকে পার্টির সঙ্গে আছি। আমি যখন মন্ত্রী তখন জি এম কাদের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি ম্যানেজার। তিনি ১৯৯৬ সালে পার্টির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। তাঁর কোনো যোগ্যতা নেই, তাঁর একমাত্র যোগ্যতা তিনি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভাই। তার পরও তাঁকে নেতা মেনে রাজনীতি করেছি। ২৮ জন নেতাকে প্রমোশন দিয়েছেন, মহাসচিব হিসেবে আমি জানি না।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১(ক) ধারার মতো আর কোনো রাজনৈতিক দলে ধারা নেই। তাই আমি বললাম এ ধারা পরিবর্তন করা দরকার। এ ধারায় তাঁকেও (জি এম কাদের) দুই দফায় জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।’