আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি সৌদি আরব সফর করেছেন।
সফরের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সফরে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। এ বৈঠককে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বুধবার ভোরে এক্স-এ এক পোস্টে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, তার দেশ আশা করে যে এই যুদ্ধবিরতি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় অবদান রাখবে এবং ‘বিরোধ সমাধানের পথ হিসেবে কূটনৈতিক উপায়ে সংলাপকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে রিয়াদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমকিা পালন করবে।
সৌদি মন্ত্রণালয়ের মতে, গত মাসে ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানানোর জন্য ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি রিয়াদের প্রতি ‘কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন’।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ইসরায়েল বিনা উসকানিতে ইরানে হামলা চালায়। এতে বহু সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও বেসামরিক নাগরিকসহ ১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন।
জবাবে ইরানও ইসরায়েলে ড্রোন-মিসাইল হামলা চালায়। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের হামলায় কমপক্ষে ২৮ জন নিহত হয়েছে।
এপ্রিল থেকে ইরানের সাথে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২২ জুন ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যস্ততাকারী হিসেবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।
তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনা তখন থেকে স্থগিত রয়েছে। তবে গত ২৪ জুন থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।
শিয়া মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান এবং সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব প্রায়শই সিরিয়া ও ইয়েমেনসহ আঞ্চলিক সংঘাতের বিরোধী পক্ষ হয়ে কাজ করছে।
গত ২০১৬ সালে রিয়াদ-তেহরান কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হলেও ২০২৩ সালে চীনের মধ্যস্থতায় তা পুনঃস্থাপন হয়। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত উচ্চপর্যায়ের আলোচনা চলছে। এটি যুবরাজ মোহাম্মদের জন্য একটি কূটনৈতিক সাফল্য, যিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আঞ্চলিক কূটনীতিতে আরো সমঝোতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছেন।
সৌদি আরব গত মাসে ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে, এটিকে ‘আগ্রাসন’ এবং ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলার পর রিয়াদ তার ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই বলেছেন, আরাকচি যুবরাজ মোহাম্মদ, সেইসাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুবরাজ ফয়সাল বিন ফারহান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুবরাজ খালেদ বিন সালমানের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং এই অঞ্চলের উন্নয়ন সম্পর্কে ‘ফলপ্রসূ আলোচনা’ করেছেন।
সূত্র : আল-জাজিরা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত